Wednesday, July 6, 2016

সেই সময় ঈদের মজা শুরু হত চাঁদ রাত থেকেই


সেই সময় ঈদের মজা শুরু হত চাঁদ রাত থেকেই। ইফতারির চেয়ে কখন C-টাইপের মাঠে হাজির হব তার টেনশন বেশী থাকত। চাঁদ দেখার চেয়ে লুকোচুরি, গোল্লাছুট খেলতাম বেশী। চাঁদ দেখলে বড়দের সাথে আমরাও হইহই করে উঠতাম।

ফুল, পাতবাহার চুরিতে আমি ছিলাম ওস্তাদ। অফিসার্স ক্লাব, শেলী ভাইদের বাগান ছিল টার্গেট। রঙিন পাতা বাহারের ডাল বোতলে করে ড্রইং রুমে রাখতাম।

তখন আতশ বাজি পোড়ানতে এত বিধীনিষেদ ছিলনা। নানা রকম বাজি ফুটাতাম আর চন্দন চাচার দাবরানি খেতাম। একবার উনাদের দোতলার দরজার সামনে সিড়ীতে টাইম বোমা ফিট করে নিচে নেমে কনা/স্বর্ণা আপার সামনে পরলাম। ধরা খাওয়ার ভয়ে বুক দুর দুর করছে। আপা বললেন, এই কাকলিকে একটু ডেকে দাওতো। আমি পালাতেও পারছিনা। আবার তিন তলায় উঠলাম। ভয় পাচ্ছি বোম যদি ফুটে পুরা ধরা। কয়েক বার কলিং বেল চাপলাম। দরজা খুলতে দেরি হচ্ছিল। ইতি মধ্যে বোমা বুম…। কিছুক্ষন পর কাকলি আপা দরজা খুললেন। বললেন, কে বোমা ফাটাইছে? আমি বললাম, আমি না, আপা আপনাকে নিচে ডাকে…..বলে ভো দৌড়।

ঈদের দিন আমাদের বয়সিরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বেড়াতাম। বিশাল গ্রূপ ছিল কিনা! প্রথমে নিজ গ্রূপের সদস্যদের বাসায় তারপর অন্যদের।শরিফা আপা বিয়ের পর নেভী ২ নং কলনী চলে গেলে চইকা কলনী থেকে হেটে বন্ধুদের নিয়ে হাজির হতাম।

ঘর সাজানোর রেওয়াজ ছিল। রঙ্গিন কাগজ, বেলুন দিয়ে ঘর সাজাতাম। কার বাসা কত সুন্দর সাজান হয় তার প্রতিযোগিতা চলত। রঙ্গিন কাগজের চেইন ড্রয়িং রূমের চারপাশ থেকে এনে ফ্যানের সাথে লাগান হত।

১/২ টাকা দামি ঈদকার্ড গুলোর কথা মনে পরে। সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান, বয়নিক ওমেন এর ছবি ওয়ালা কার্ড দেয়া নেয়া চলত। কখন কোন বন্ধুর সাথে আড়ি নিলে তার সাথে ভাব করার জন্য এই কার্ড বেশ কাজে লাগত।

ঈদের দিন ভোরে আবাহনি-মোহামেডান খেলা কে কবে চালু করছিল মনে নাই। ছোট হওয়াতে আমাদের জায়গা ছিল দর্শক গেলারি (বড় শুকনা ড্রেনের পাশে) ।

বকশিস বলতে আব্বার দেয়া নতুন ১/২ টাকা।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss