Wednesday, February 24, 2016

মানব প্রজাতির মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেনী বহুল আলোচিত


মানব প্রজাতির মধ্যে মধ্যবিত্ত শ্রেনী বহুল আলোচিত। দুনিয়ার যত বড় বড় কবি লেখক আছে তাঁরা মিডল ক্লাসদের নিয়ে সাহিত্য চর্চা করেই বিখ্যাত হয়েছেন। তাতে অবশ্য মধ্যবিত্তদের কোন লাভ বা ক্ষতি বৃদ্ধি হয়নি। মধ্যবিত্তদের কিছু আইকনিক স্বভাব আছে। হাজার চেষ্টা করলেও কেউ এসব থেকে বের হয়ে আসতে পারবে না। 
মধ্যবিত্তদের টিভি রিমোট পলিথিন দিয়ে মোড়ানো থাকে। যখন টিভির রিমোট নষ্ট হলে হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হতো তখন থেকে শুরু। এখন পঞ্চাশ টাকায় রিমোট পাওয়া যায় তবুও মধ্যবিত্তদের টিভি রিমোট এখনো পলিথিনের ভেতর থেকে বের হয়ে আসেনি। 

মধ্যবিত্তদের ভাই-বোন-মা-বাবা সবার সাথে সম্পর্ক থাকে গভীর। মা বছরের ৩৬৫ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রান্না ঘরের কাজ করতে করতে মৃতপ্রায়। কারো সেদিকে দৃষ্টি নেই। বরং তরকারিতে লবণটা বেশি হলে, ঝালটা কম হলে রান্না শিক্ষা সম্পর্কে মাকে বিরাট লেকচার দেয়া হয়ে যায়। সেই ভাই বোনেরাই মায়ের একটু সর্দি জ্বর হলে চাকরি-বাকরি, স্কুল কলেজ বাদ দিয়ে মায়ের সেবায় লেগে থাকে। বলা বাহুল্য মায়ের সুস্থতা আর ছেলে মেয়েদের পুরনো রুটিনে ফিরে আসা সমানুপাতিকভাবে ঘটে। 


মধ্যবিত্ত ঘরের ছোট ভাইরা বড় জনের ছোট হয়ে যাওয়া শার্ট-প্যান্ট পড়ে বড় হয়। ছোট বোনরা পায় বড় বোনের সালওয়ার-কামিজ। একইভাবে বড়র বইগুলো রেখে দেয়া হয় ছোটর জন্য। 

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরা অভাব বুঝে কিন্তু চোখে দেখেনা কখনো কারন মধ্যবিত্ত বাবা-মায়েরা স্নেহের, আদরের একটি মসলিন পর্দা দিয়ে সর্বক্ষন ঢেকে রাখে অভাবের কুৎসিত রুপ। সিএসএম এর আমরা সবাই ই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। আরেকটু শ্রেনী ভাগ করলে উচ্চমধ্যবিত্ত আর নিম্নমধ্যবিত্ত হতে পারে কিন্তু গোড়াতে সবাই মধ্যবিত্ত।
এই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানই অসুস্থতার কারনে অমানুষিক যন্ত্রনা ভোগ করতে থাকা পিতার পাশে বসে মোবাইলে ফার্মভিল খেলে যেতে পারে পিতার যন্ত্রনাকাতর মুখের দিকে একবারও না তাকিয়ে। পিতার চোখ সন্তানের সব পড়তে পারে। ছেলে জানে বাবার চোখে চোখ পড়লেই বাবা বুঝে ফেলবে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকা পিতার কষ্টে কি দাবানল ছড়িয়ে যাচ্ছে তার ভিতর। রোগযন্ত্রনার চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠবে অসহায়ত্বের যন্ত্রনা। মধ্যবিত্তদের একটাই অভিশাপ অসুস্থতা।

স্বপ্ন দেখতে বড় ভালো লাগে। বেঁচে থাকার স্বপ্ন, ভালো থাকার স্বপ্ন সবাই ই তো কমবেশি দেখে। আজ নাজমুল ভাইয়ের পোষ্ট পড়ে খুব ইচ্ছা করছে বড় একটা স্বপ্ন দেখি। ভাবতে ইচ্ছা করছে পতেঙ্গার ওই বসতি থেকে বেরিয়ে আসা কেউ বিনা চিকিৎসায় থাকবে না, ওই বসতির কোন সন্তান অসুস্থ পিতার চোখে চোখ রাখতে একবিন্দু দ্বিধা করবে না।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss