মামুন ভাই বললেন "তরু তুই আড্ডা নিয়ে তোর অভিজ্ঞতা লিখ"
আমি তাই লিখতে বসলুম tongue emoticon
.
.
ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে নাকি নভেম্বরের শেষ দিকে আমার তা ঠিক মনে নেই । একদিন আব্বু আম্মু বাইরে থেকে এসে বললো কলোনীবাসীর রিইউনিয়ন হবে । আমি তো শুনে খুশিতে আটখানা । কতদিন পর সবাইকে দেখবো!
গেলাম আমার বড় আন্টির ছেলে জুয়েল ভাইয়ার কাছে ডিটেইলস জানতে। তখন জুয়েল ভাইয়া আমাকে এই গ্রুপে এড করলো । গ্রুপে এড হয়ে যেন আমি বিশাল এক রাজ্য খুঁজে পেলাম যেখানে সবাই আমার খুব আপন মানুষ । প্রথম প্রথম আমি কাউকেই আসলে চিনতাম না,কারন আমার সাথে সবারই বয়সের ডিফারেন্স অনেক বেশি,আমি যখন খুব ছোট তখনই বেশির ভাগ ভাই বোনেরা কলোনী ছেড়ে চলে গেছে । যাই হোক সবাই আমাকে অনেক আপন করে নিলো যেটা আমার কাছে কল্পনাতীত ব্যাপার ছিল । আড্ডার আগে শায়লা আপু,সামী ভাইয়া, বন্যা আন্টি,আতিক ভাইয়া,রাসেল ভাইয়া ছাড়া আসলে তেমন কাউকেই চিনতাম না আমি ।
আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকলাম গ্র্যান্ড আড্ডার ।
নতুন জামা কেনা নিয়ে আম্মুর সাথে একদফা মান অভিমান,কথা বলাবলি বন্ধ সহ ঠান্ডা ঝড় চললো বাসায় tongue emoticon
অবশেষে আসলো সেই কাংখিত দিন,২৯শে জানুয়ারী ।
ভ্যেনুতে পৌঁছে সিএনজি থেকে নেমে আব্বুর সাথে দাঁড়ালাম। এরপর যা দেখলাম সেই দৃশ্য সারাজীবন মনে থাকবে । একেকজন ভাইয়া আপু আসছে আর আব্বুকে পায়ে ধরে সালাম করছে,ভাইয়ারা আব্বুকে বুকে জড়িয়ে ধরছে । কি অসাধারন একটা দৃশ্য....
রেজা ভাইয়া দেখলাম আব্বুকে বেশ কিছুক্ষন বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন,উনার চোখের কোনে কি আমি কিছুটা অশ্রু চিকচিক করতে দেখেছিলাম সেই মুহুর্তে??
আব্বু ইদানিং প্রায়ই বলেন"আমার ৩২বছরের শিক্ষকতা জীবন ধন্য,২৯তারিখ আমি যা পেয়েছি তা আমার পুরো জীবনটা ধন্য করে দিয়েছে"
হ্যা,এতটা সম্মান আমার ভাই বোনেরা আমার বাবাকে দিয়েছেন যা আমার বাবা তার বাকি জীবনটা মনে রাখবেন আর সবাইকে গল্প করবেন ।
.
প্রথম দিকে বেশ অস্বস্থি লাগছিল । ভাবছিলাম কেউ কি আমাকে চিনবে??তারপর আমার ছোটবেলার খেলার বন্ধু রাহিন আপুকে (আকতার আংকেলের মেয়ে) পেয়ে গেলাম।।
ও আর আমি এদিক ওদিক ঘুরছিলাম । আমি নিজ থেকে গিয়ে সবার সাথে পরিচিত হবার চেষ্টা করছিলাম ।
সবচে বেশি অবাক হলাম যখন ইউনুস কাকাকে আমার নাম বলতেই কাকা আমাকে চিনে ফেললো grin emoticon
কাকাকে আমি কি যে পছন্দ করি তা বলে বুঝাতে পারবোনা ।
ছোটবেলায় যাকে চরম ভয় পেতাম সেই আতিক কাকার সাথে গিয়ে আমি কিছুক্ষন গল্প ও করলাম grin emoticon
এরপরের পার্টটা আমার সবচে প্রিয় ।
রেজা ভাই সবাইকে নাম ধরে ধরে স্টেজে ডাকছেন । আমি আম্মুদের সাথে বসে বসে দেখছি আর আম্মুকে বলছি উনি অমুক ভাই,ওইযে তমুক আপু colonthree emoticon
হঠাত করে শুনি "মুনতাহা তাবাসসুম"!!
রেজা ভাই আমার নাম ডেকেছেন!!!বিষ্ময়ে থতমত খেয়ে বসে আছি । আম্মু বললো যাও যাও তোমাকে ডাকছে তো । গেলাম স্টেজে । এত এত বড় মানুষজনের মাঝে আমি এক মাত্র ছোট frown emoticon
হঠাতই পেয়ে গেলাম আমাদের ওবাম থুক্কু উমামাকে kiki emoticon
পরিচয় হল,কথা হল । গ্রুপ ফটোগুলোয় আমি জায়গা পেয়ে গেলাম যা আমি ভাবিনাই কখনো ।
ঘুরে ঘুরে সবাইকে দেখছিলাম । শায়লা আপুটা কেন আসছেনা তা নিয়ে চিন্তিত আমি একটু পর পরই হিমেল ভাইয়ার আম্মুকে গিয়ে জিজ্ঞেস করছিলাম "খালাম্মা শায়লাপু কই,আসেনা ক্যান?কখন আসবে?" colonthree emoticon
অবশেষে অনেকক্ষন পর আপু আসলো দেখা হলো,আপু আমাকে জড়িয়ে ধরলো kiki emoticon
এরপর নুরুদ্দীন ভাইয়া অনেকগুলো ছবি তুলে দিলো যা হাতে পাইনাই cry emoticon
.
.
আমি কাউকে ভাল লাগলে তাকে খুব ভাল করে অবজার্ভ করি।
পুরো আড্ডায় সবচে বেশি লক্ষ্য করেছি চারটা মানুষকে-রেজা ভাই,আতিক ভাই,রাসেল ভাই আর জাবেদ ভাইকে । রাসেল ভাই আর আতিক ভাইয়ের লিখার চরম ফ্যান আমি । রাসেল ভাই নিজ থেকে কথা বলেছিল । কিন্তু আতিক ভাই আর রেজা ভাইয়ের সাথে সাহস করে গিয়ে কথা বলতে পারিনাই । জাবেদ ভাইয়ার ছবি তুলা,আতিক ভাই আর রেজা ভাইয়ের প্রতিটা মুভমেন্ট আমি অতি আগ্রহ নিয়ে অবজার্ভ করেছি tongue emoticon
আর শায়লা আপু আর রাজীব ভাইয়াকে দেখে দেখে ভাবছিলাম এই দুজন মানুষ এত্ত সুন্দর কেন?? kiki emoticon
ভাল লাগছিল প্রতিটা মানুষকে একে অপরের সাথে গল্প করতে দেখে । সবাইকে ভীষন আপন লাগছিল । খারাপ লেগেছে মিউজিক্যাল চেয়ারে পারশিয়াল্টি দেখে frown emoticon
বিকেলে রেললাইনে রনি ভাই আর জাবেদ ভাইয়া ছবি তুলে দিলো angel emoticon
বন্যা আন্টি,তানিয়া আপুদের মজার উপস্থাপনা,
রাতের প্রোগ্রাম,ফানুস ওড়ানো,
রাজিব ভাইয়ের ফাটাফাটি গান,
নিরু আংকেলের ব্রেক ড্যান্স,
আতিক ভাই সুজন ভাই পুলক ভাই রাসেল ভাইদের হাত পা ছুড়ে গানের তালে তালে ইচ্ছা মতন নাচ,রেজা ভাইয়ের দূর থেকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে এসব দেখা- আমার ভাল লেগেছে । আমার জীবনের একটা স্মরনীয় দিন হয়ে গেছে এই ২৯শে জানুয়ারী ।
ইচ্ছে হচ্ছিলনা প্রোগ্রাম থেকে আসতে । কিন্তু বেশি রাত হলে গাড়ি পাবোনা তাই চলে আসতে হলো frown emoticon
আসার সময় মনটা ওই ভেন্যুতেই রেখে এসেছিলাম । বাসায় ফিরে গেলাম এক রাশ ভালা লাগা আর মুগ্ধতা নিয়ে যে মুগ্ধতার ঘোর কাটতে আমার বেশ সময় লেগেছিল । আমি আমার শেকড়,আমার সিএসএমের সাথে কাটাতে চাই এমন আরো ১০১টা মুহুর্ত.... smile emoticon
.
.
.
(অনেক বিশাল লিখা । মনে হয়না কেউ পড়েছে pacman emoticon )
No comments:
Post a Comment