Friday, February 26, 2016

বাসার আশপাশে কোন এক জায়গা থেকে "নাগিন নাগিন" গানটা শোনা যাচ্ছে


বাসার আশপাশে কোন এক জায়গা থেকে "নাগিন নাগিন" গানটা শোনা যাচ্ছে।প্রতিনিয়ত এই গ্র্যান্ড আড্ডা নিয়ে স্মৃতি কাতর হয়ে পড়ছি।আড্ডার দিন যে বড় ভুলটা আমি করেছি সেটা হল অনেক দেরিতে পৌঁছানো।যাইহোক শারীরিক শিক্ষা কলেজে ঢুকতেই দেখি অনিকাও মাত্র এসছে।আম্মা দাঁড়িয়ে আছে হিমেলভাইয়ের আম্মার সাথে।জসিমভাই মাশুকভাইয়ের সাথে দেখা হল।মাশুকভাইকে কত্ত বছর পর দেখলাম।স্মৃতিকাতর হয়ে চোখ ভিজে উঠার আগেই দৌড় দিলাম মূল অনুষ্ঠানের দিকে।হুম আসলেই দৌড় দিয়েছিলাম কিন্তু।গিয়ে দেখি আমার প্রাণের বন্ধুরা ওইখানেই আছে।ওদের সাথে কথা বলতে বলতে দেখি বন্যাপা কথার ফুলঝুরি দিয়ে স্টেজ মাতাচ্ছেন।বন্যাপার সাথে কথা বলে ফিরে আসতেই ইয়াসমিন আপা আর খালাম্মার সাথে সাক্ষাত।ইয়াসমিন আপাকে যে কত বছর পর দেখলাম।উনাদেরকে দেখে কিছুক্ষণের জন্য আমি আমার শৈশবে ফিরে গেলাম।ইয়াসমিন আপার কন্যা সুবহা'র সাথে ছবি টবি তুলে আম্মা নিয়ে গেল সুমা নাসরিন আপার কাছে।


কথা বলতে বলতে দেখি বাবুলভাই মামুনভাইও আছে।উনারাও আমার শৈশবের একটা অংশ।আবার ফিরে গেলাম প্রাণের বন্ধুদের কাছে।আড্ডা দিতে দিতে শুনি স্টেজ থেকে রেজাভাই "শায়লা "বলে ডাকছে।শরমের সহিত স্টেজে উঠলাম,উঠতে গিয়ে অবশ্য দুইবার উষ্টাও খেলাম যা আমার জন্য খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার।ওখানে সবাই মিলে দারুন মৌজ মাস্তি করলাম।অবশেষে টলিভাইয়ের দেখা পেলাম।উনি আমার কথা রেখেছেন। জিন্স পরেই আড্ডায় এসেছেন,হোক সেটা কালো রংএর।স্টেজ থেকে নেমেই জনসংযোগে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম।পাগলের মত ছুটোছুটি করেছিলাম।রফিকুল মাওলা চাচির সাথে দেখা হল সাথে মুনাপার ছেলে জারিফ।আমাদের সেই ছোট্ট জারিফ এখন আর ছোট নেই।স্টেজের একদম পিছনে রিনাপা মাহিনকে নিয়ে বসে আছে।আমার বাপধন মাহিন।আড্ডায় ঘুরতে ঘুরতে মাহফুজ স্যারের কন্যা তরুর সাথে প্রথমবারের মত দেখা কি মিষ্টি চেহারা।

উমামা ইনানের সাথে একবার দেখা হওয়ার পর উনারা গায়েব।কলোনির চাচারা চাচিরা, বড় আপারা ভাইয়ারা ছোট ভাইবোনরা, একটু একটু করে সবার সাথে কথা বলা, হাসি বিনিময় করা এভাবেই সময়টা কেটে যাচ্ছে।প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে দুপুরে তৃপ্তি করে মেজবানী খেলাম।ধন্যবাদ কমুভাই এবং উনার টীমকে।খেতে খেতেই শুনলাম মিষ্টি এসেছে।খাওয়া শেষে ওর সাথে দেখা করে বাচ্চার রেস্টের জন্য ব্রেক নিয়ে গেলাম বান্ধবীর বাসায়।এটাও আমার একটা ভুল ছিল যার কারনে খেলার পর্ব এবং গ্রুপ ছবি তোলা মিস করেছি।বিকালে আবার আড্ডায় এসে দেখি অনেকেই চলে গেসে।মনটাই খারাপ হয়ে গেল।সন্ধ্যা হতেই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু।আমার ছেলের বিরক্ত করাও ততক্ষণে শুরু হয়ে গেসে।উপভোগ করলাম প্রত্যেকটা আইটেম। অবশেষে রাতে অতিথি শিল্পীর ঝাকানাকা গান সব পোলাপাইনের মাঝে উন্মাদনা এনে দিল।এদিকে আমি আমার ছেলের প্যানপ্যানানি আর কান্না থামাতে ব্যাস্ত।ছেলে কোলে ঘুমাতেই ওকে ওর বাবার কাছে দিয়ে আমিও নির্ভার হয়ে গান শুনতে বসলাম। শুধু কি গান শুনলাম,প্রাণ ভরে নাচানাচিও দেখলাম।কি সেই নাচ,কি সেই অংগ ভঙ্গি।ও আচ্ছা এরই ফাঁকে অবশ্য সুজনের বলিউডি নাচ আর নিরুভাইয়ের ব্রেক ড্যান্স সবার হৃদয় নাড়িয়ে দিল।নাগিন নাচ ছিল দেখার মত।এত সুশৃঙ্খল কিন্তু বিচিত্র অংগভঙ্গির নাচ সিএসএম ছাড়া কোথাও সম্ভব না।কিন্তু নাচ আর বেশি উপভোগ করতে পারলামনা।

শুনলাম নানুর বাসায় আব্বা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছে।এদিকে ক্ষুধায় ছেলেও ঘুম থেকে উঠে গেসে।বন্যাপার অশেষ মেহেরবানিতে ছেলেকে খাওয়ানোর ব্যাবস্থা করে প্যাকেট নিয়ে আব্বাকে দেখতে দৌড় দিলাম।কিন্তু ব্যাগ যে অডিটোরিয়াম এর একটা তালাবন্ধ রুমে।চাবির জন্য ওয়েট করতেই দেখি টলি ভাইও ফ্যামিলি নিয়ে একই অবস্থায়। উনার রাগী চেহারাটা দেখলাম তখন।মামুনভাই চাবি নিয়ে আসলে শুনি উনার আম্মা ঢাকায় হাসপাতালে। অথচ উনাকে দেখে বোঝার উপায় নেই উনার ভিতরের অবস্থা।এতটাই ত্যাগ স্বীকার এই গ্র্যান্ড আড্ডার জন্য।অবশেষে ব্যাগ উদ্ধার করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম আমার প্রাণের আড্ডাকে রেখে।আমি আবারো অপেক্ষায় আছি এরকম একটা আড্ডার জন্য।আমার এই অপেক্ষার প্রহর যে কবে শেষ হবে.....

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss