২৯/০১/২০১৬ তারিখ সকাল বেলা লিটন সজিবকে নিয়ে গেলো মুরগি আনতে। সাতটা বাজে রাজিব বললো ভাইয়া আপনি বাসায় গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়ে আসেন। আমি রাজি ছিলাম না। বাসায় আসার দশ মিনিট পর লিটন ফোন দিল সাইজ মতো মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বেরিয়ে পড়লাম। বাসা থেকে সবাই আমার সঙ্গে যেতে চাইলো। আমি মুরগির সন্ধানে যাচ্ছি বলে কাউকে সঙ্গে নিতে পারলাম না। অনেক কষ্টে সাইজ মতো মুরগি পাওয়া গেলো। সবাই সেজেগুজে স্পটে আসছে আর আমি জবাই করা মুরগির বস্তা নিয়ে স্পটে গেলাম। গিয়ে দেখি তখনো সকালের নাস্তা আসে নাই। ইমরুলকে ফোন দিলাম নাস্তা নিয়ে তাড়াতাড়ি আসার জন্য। নাস্তাও আসলো এবং সাথে সাথে বিতরন শুরু করে দেওয়া হলো। নাস্তা নেওয়ার জন্য মাইকে ঘোষনা দিতে গিয়ে দেখি মাইক শাহিন ভাইয়ের দখলে। শাহিন ভাইকে বললাম ঘোষনা দেওয়ার জন্য।
এদিকে বাবুর্চির লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম কোন কিছু লাগবে কিনা? তারা বললো আপাতত কিছু লাগবে না। গেলাম স্টেজ এর দিকে। দেখি রেজা ভাই একেকজনের নাম ধরে ডাকছে। এক পাশে দাঁড়ালাম। একটু পরে আমাকেও ডাকলো। স্টেজে উঠলাম সবাই লাইন ধরে দাঁড়ালাম আবার একটু পর নেমেও গেলাম। কেন উঠানামা বোধগম্য হলো না। যেখানে বাচ্চাদের খেলা হচ্ছে সেখানে যাওয়া মাত্র বাবুর্চির লোকে ফোন দিল লবন লাগবে। তাড়াতাড়ি এসে মাসুক ভাইয়ের লোকটাকে পাঠালাম লবনের জন্য।
আবার স্টেজে সেখানে আসলাম। আসার একটু পরে লিটন ফোন দিল। দেখা হলে লিটন বললো মুরগির গিলা কলিজা ডাল দিয়ে রান্না করবে নন মুসলিমদের জন্য। তাই এখন ডাল লাগবে। কিন্ত কে যাবে? কাকে পাঠাবো সেটা চিন্তা না করে নিজেই চলে গেলাম বড়পোলে ডাল কিনতে। ডাল আনার পর বাবুর্চি বললো রান্নার পানি লাগবে। মিনারেল ওয়াটার। পানির ব্যবস্থাও করা হলো। দুপুরের খাবারের পর রাতের আয়োজনেও সমস্যা দেখা দিলো এটা লাগবে, সেটা লাগবে, প্যাকেট কোথায় করবে ইত্যাদি। এভাবে আসা যাওয়ার মধ্যে দিনটা পার করলাম।
ভাল করে কোন কিছু উপভোগ করতে পারিনি। কারো সঙ্গে ভালো করে কথা হয়নি। সবার সঙ্গে দেখা করতে পারিনি। আমাদের গ্র্যান্ড আড্ডায় যে ফটোগ্রাফার ছিলো সে নাকি ১৫০০ ছবি তুলেছে অথচ আমার স্টেজের গ্রুপ ছাড়া অন্য কোথাও ছবি আছে কিনা সন্দেহ। তাতেও কোন আক্ষেপ নেই। সন্ধ্যা সাতটার বাজার আগে অনেকে রাতে খাবার চাইলো বললো কেঊ ঢাকা যাবে, কেউ ষ্টীল মিল, কেউ অক্সিজেন। আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম আটটার আগে দিবো না। এই জন্য সেদিন অনেকজনে আমার সাথে রাগ করেছেন। তার জন্য আমি দুঃখিত। সেদিন রাতে একটা ব্যাপার লক্ষ্য করলাম কোন প্রকার ঘোষনা ছাড়াই ১২০০ প্যাকেট বিতরন শেষ এবং কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়াই। রাতের খাবারও শেষ করে সবাই চলে গেলো। আমি, মনু, লিটন বের হলাম সবার শেষে। ততক্ষণে আমার গলার ভোকাল কর্ড ডাউন হয়ে গেছে আওয়াজ বের হচ্ছে না। পুরো এক সপ্তাহ গলার আওয়াজ ক্লিয়ার হয় নাই।
সেদিন আমি কোন প্রোগ্রাম ভাল করে উপভোগ করতে পারি নাই। আমার ছেলে মেয়ের সাথে ভাল করে কথা বলতে পারি নাই। ওরা সেদিন কি খেলো না খেলো তার খোঁজও নিতে পারি নাই। তাতেও আমার বিন্দু পরিমান দুঃখ নাই। আমি দুঃখ পাবো সেদিন যদি আমার ব্যবহার কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে। আমি আবারো বলছি সেদিন যদি আমার ব্যবহারে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে, কেউ খাবার না পেলে তার জন্য আমি দুঃখিত। খাওয়ার আয়োজন নিয়ে আপনাদের এতটুকু সন্তুষ্টি করতে পারি তাহলে এই সফলতা আমাদের সকলের। আর সকল ব্যর্থতা আমার একার।
No comments:
Post a Comment