সময়টা সম্ভবত ২০০০/২০০১।আমি ৩য়/৪র্থ সেমিস্টারে অধ্যায়ণরত।ইউনিভার্সিটির এক বন্ধু একটি টিউশনির খবর দিলো তবে লিটল জুয়েলস ইংলিশ মিডিয়ামের ক্লাস সিক্স এর ছাত্রী যাহা আমার জন্য প্রথম।যাইহোক টাকা দরকার তাই রাজী হয়ে গেলাম।আমাকে নিয়ে গেলো বহদ্দারহাটের পাশে বাদুরতলা ছাত্রীর বাসায়।কথা হলো ছাত্রীর মা’র সাথে,ছাত্রী খুব ফাঁকিবাজ,প্রয়োজন হলে মারবেন এইসব কথা বলার সাথে ছাত্রীর লাজুক হাসি।পরিচয় পর্ব শেষে পরেরদিন আসবো বলে বিদায় নিলাম।পরেরদিন গেলাম পড়াতে,প্রথম দিনেই আমাকে জিজ্ঞাসা “স্যার আপনি নাকি কম্পিউটারের উপর পড়াশোনা করেন”।প্রতিউত্তরে আমি মৃদু হেসে জবাব দিলাম “হ্যাঁ আমি কম্পিউটার মানে সিপিইউ এর উপর বসে পড়ালিখা করি”।ছাত্রীর কি হাসি...।এর পর দেখি কিছু লিখতে দিলে লিখার সময় গান গেয়ে গেয়ে লিখে,মানা করেও লাভ হলোনা।আমাকে বলে গান গেয়ে লিখলে সব পড়া মনে পড়ে...।
আরেকদিন গেলাম ছাত্রী আমাকে বলে স্যার হৃতিক রোশানের মত চুল কাটতে পারেন না!!(তখন “কাহো না পেয়ার হো” সিনেমা হিট করেছিলো)। আমিতো তাজ্জব মেয়ে কয় কি!!!আমি নিশ্চুপ চেপে গেলাম...।
অন্য আরেকদিন বলল স্যার কালকে প্রিয়াদের বাসায় পার্টিতে নিতু যে বেয়াদবি করছে!!আমি বুঝলাম কিছু জিজ্ঞাসা করা যাবেনা,জিজ্ঞাসা করলেই বিপদ।শুধু এইটুকু বলেছিলাম তোমার বাবা মা গিয়েছিল??।এর পরেই কাহিনী শুরু করলো...ছাত্রীর মা নতুন বেত এনে আমাকে দিলো।বেত দিয়ে মারলেও সমস্যা,ছাত্রী দৌড়ে চলে যায় খাটের উপর,এক পাশ থেকে মারলে চলে যায় আরেক পাশ।মানে দাড়ালো আমার মার দেওয়াটাও সে এঞ্জয় করতেছে। মহা বিপদ!!!
বন্ধুকে একটু করে বলে রাখলাম আমার দ্বারা হবেনা মনে হয়।বন্ধু নিয়ে গেলো ছাত্রীর মামার দোকানে বন্ধুর বাসার পাশেই মোহম্মদপুরে।ছাত্রীর মামাকে(যার মারফতে টিউশনি) বুঝালাম!!! মামা আমাকে বুঝালো ভাই একটু চেষ্টা করেন, এর আগে তিনজন চলে গেছে তার মধ্যে একজন মেয়ে টিচারও ছিলো।কি আর করা পরেরদিন আবার গেলাম পড়াতে।।
পড়ার রুমে ঢুকা মাত্র দরজাটা বন্ধ করে দিতে চাইলো,আমি বললাম কি কর কেনো কেনো!!! বলে আম্মুটা বেশী বেশী।কিছু বুঝলাম না ,যাইহোক বললাম আচ্ছা দরজা এমনি ঠেলে রাখো।পড়তে শুরু করলো। হঠাত জানালার পর্দা টেনে দিতে লাগলো ,জিজ্ঞাসা করলাম কেনো করতেছো এইরকম।আমাকে বলে পাশের বাসার ছাদে অই ছেলেটা আস্ত ফাজিল,শুধু তাকাই থাকে।।আমি বললাম আমি দেখতেছি তুমি তোমার পড়া পড়তে থাকো,তুমি না দেখলেই তো হয়।এর পরে বলে না স্যার, অই ছেলে একদিন রাস্তায়...আমি বেতের বাড়ি দিয়ে থামাইলাম।
সামনে তার ফাইনাল পরীক্ষা, আমি চিন্তা করলাম যা পড়াইলাম, এই পড়াতে ক্লাস টেস্ট মোটামুটি ভালো করলেও ফাইনালে ডাব্বা মারবে সিউর।তাই ত্বরিত সিদ্ধান্ত নিলাম না আর না!!!ছাত্রীকে কিছু বললাম না,পরের কয়েকদিন না যাওয়াতে বন্ধুকে খবর পাঠালো।বন্ধুকে সাফ জানিয়ে দিলাম হবেনা ভাই পারবোনা সরি।।সেই মাসের বেতন টাও নিলাম না।
পরে বন্ধু থেকে জানতে পারলাম ওই ছাত্রী কে বাংলা মিডিয়ামে ভর্তি করিয়েছিল।ছাত্রীর মা’র বেশী ইচ্ছা ছিল ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ানোর।আহা ইংলিশ মিডিয়াম...।
No comments:
Post a Comment