Saturday, March 5, 2016

যদি ভালবাস


আমি রিয়া।মা বাবার একমাত্র সন্তান।বাবা সরকারি চাকরি করেন।মধ্যবিত্ত পরিবার।অনার্স পড়ি।সেকেন্ড ইয়ারে উঠতে না উঠতে মা বাবা আমার বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। কারন বাবা আগামী বছর অবসরে যাবেন।আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো তে দেখা যায় মেয়েরা অনার্স এ সেকেন্ড বা থার্ড ইয়ারে যেতে না যেতে বিয়ের জন্য পাত্র খোজা শুরু হয়।আর বাবা যদি অবসরে যাবার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ত আর কথাঈ নেই।উঠ ছুড়ি তোর বিয়ে র মত অবস্থা।আর এ ব্যাপার টাতে উতসাহ দেবার জন্য থাকেন কিছু আত্নীয় সজন।

মা বাবার এমন আচরনে আমি কিছুটা বিরক্ত হলাম।কারন আমি একজনকে পছন্দ করি।ওর নাম রিফাত।কিন্তু সে এখনো নিজের পায়ে দাড়ায়নি।কিন্তু আমরা পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম।নির্ধারিত দিনে আমি বিয়ে করতে ওর বাসায় গেলাম।বন্ধুরা গেল কাজি ডেকে আনতে।রিফাত রেডি হচ্ছে। এমন সময়ে আমার মোবাইলে কল আসল।বাবা স্ট্রোক করেছেন।আমার ভেতর অপরাধবোধ কাজ করল।আমি রিফাত কে ওর ড্রেসিংরুম এ দরজায় ছিটকিনি লাগিয়ে চলে আসলাম।


তারপরে রিফাতের সাথে আর যোগাযোগ করিনি।ও বিদেশ চলে গেল।আমারো বিয়ে হয়ে গেল সানি নামের এক ব্যবসায়ী র সাথে।আমি মন দিয়ে সংসার করছি।একদিন সানির সাথে রিফাত আমার বাসায় আসল ওর ব্যবসার কারণে। চমকে উঠলাম।মনে মনে ভয় করতে লাগল।রিফাত যদি সানিকে সব বলে দেয়।আমার শঙ্কা যেন রিফাত যেন উপভোগ করতে লাগল, অন্তত ওর চেহারা তাই বলতে লাগল।

এর পর রিফাতের মোবাইল থেকে আমার মোবাইলে কল,মেসেজ আসতে লাগল।আমি যেন ওর সাথে দেখা করি।আমি এড়িয়ে যেতে থাকলাম।কিন্তু ও যেন নাছোড়বান্দা। আমাকে রীতিমত হুমকি দিতে লাগল না হলে সানি কে সব বলে দেবে।

একদিন আমি ওর সাথে দেখা করলাম।ওর দাবি আমি যাতে ওর কাছে ফিরে যাই।আমি নাকি ওকে ঠকিয়েছি।আমি ওকে বোঝাই এই অবস্থায় ওর কাছে যেতে পারি না।ও যাতে নতুন করে সব কিছু শুরু করে।কিন্তু ও বলে ওর কথায় রাজি না হলে সানি কে সবকিছু বলে দিবে।আমি জানতে চাই, " কিসের অধিকারে"। রিফাত বলে," তোমাকে ভালবাসার অধিকারে"।আমি বললাম," তুমি ত ভালবাসতেঈ জানো না। ভালবাসা মানে ভালবাসার মানুষকে ছোট করা নয়, তাকে বিপদে ফেলে দূরে দাড়িয়ে উপভোগ করা নয়।তার ভাল চাওয়া,বিপদে পাশে থাকা"। এটা বলে আমি চলে আসি।পেছন ফিরে তাকাই না।

পরদিন রিফাত বিদেশ চলে যায়।রেখে যায় আমার জন্য একটা চিঠি।ও নাকি ভালবাসার নতুন অর্থ খুজে পেয়েছে। তার সন্ধানেই নাকি ফিরে গেছে।

No comments:

Post a Comment