Saturday, March 5, 2016

টিকা


এখন সরকারী, বেসরকারি হাসপাতালে জন্মের পর পরে নবজাতকের টিকা দেয়। আবার কার্ড করে দেয় পরবর্তী এক বছর পর্যন্ত কখন কি টিকা দেওয়া হবে। আবার সিটি কর্পোরেশন ও পাড়ায় পাড়ায় কর্পোরেশন ঘোষিত দিনে ক্যাম্প বসিয়ে বাচ্চাদের টিকা দেয়। ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ায়। কিন্তু আগে নিয়ম ছিলো না। এত বেসরকারি ক্লিনিক না থাকায় শুধু সরকারী হাসপাতালে দিত। আর মাঝে মাঝে বিভিন্ন এনজিও সরকারি সহায়তায় স্কুলে কিংবা একেক দিন এক জায়গায় টিকা দিত। আর তখন টিকা মানে মারাত্মক ভয়াবহ ব্যাপার।

একবার আমাদের স্কুলে টিকা দিতে একটা গ্রুফ আসলো। সকাল থেকে তেমন খবর পাই নাই। দুপুরের পরে তাহের খবর দিলো একটু পরে আমাদের ক্লাসে টিকা দিতে আসবে। আমরা তখন সবাই ভয়ে অস্থির। ক্লাসে স্যার পড়াচ্ছিল। কিন্তু সেদিকে কারো মন নাই। সবাই টেনশনে আছে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যায় এই চিন্তায়। কারন টিকা দিলে হয় জ্বর আসবে নয়তো ব্যাথাটা সহজে যাবে না। তাই টিকা দেওয়ার স্টাইলটাও ছিল অন্য রকম। অনেকটা পিস্তলের মত ছিল টিকা মেশিনটা। তাই কেউ কেউ এই চিন্তা করে ফেললো যে, ক্লাস শেষ হলে সিঁড়ির নীচ দিয়ে স্কুলে পিছনের দিক বের হয়ে যাবে। কিন্তু ক্লাস শেষ হওয়ার আগে টিকা বাহিনি সরঞ্জাম নিয়ে হাজির। 


কেউ কেউ পালাতে পারলো না। টিকা বাহিনি আসার পরে কেউ কেউ বাথরুমে লুকাতে চাইলো তাতে লাভ হলো না। স্যার ওখানে বেত নিয়ে দাড়িয়ে আছে। বের হতে না পেরে, বাথরুমে যেতে না পেরে সবাই পিছনে গিয়ে এক জায়গায় জড়ো হলো। তারপর টিকা বাহিনি সেখান থেকে ফার্মের মুরগি যেভাবে খাঁচা থেকে বের করে সেভাবে একজন ধরে তারপর শার্টের হাতা উঠিয়ে পিস্তল হাতে লাগিয়ে টাস করে মেরে দেয়। তারপর বই খাতা দিয়ে বাসায় পাঠাই দেয়। সে স্মৃতি এখনো মন হলে গা শিউরে উঠে।

No comments:

Post a Comment