Sunday, March 27, 2016

হাত ঘড়ি কান্ড


দুপুর বেলায় সবসময় যে আমরা খেলতে বের হতাম তা না।মাঝে মাঝে কোন মেহমান আসলে তখন বের হয়ে যেতাম।কারন মেহমান আসা মানেই ঘর ভরা মানুষ,আওয়াজ ইত্যাদি ইত্যাদি।
একবার আমাদের বাসায় এক মেহমান এলেন।সম্ভবত আমার ছোট মামা।উনি উনার হাত ঘড়ি খুলে রেখে ওয়াশরুমে গেলেন। আমি ঘড়ি টা হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে একসময় বের হয়ে গেলাম
।লিংকন কে সাথে নিয়ে সামনে গিয়ে কি যেন দেখছি।এমন সময় দেখলাম,পকেট এ ঘড়ি নাই।পাশে মিষ্টি দের বিল্ডিং এর ছায়ায় বসে গল্প করছিল বিল্লাল,আমাদের তখনকার বুয়া বকুলের মায়ের ছোট ছেলে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,
বিল্লাল,তুমি কি একটা ঘড়ি পাইছ?
বিল্লাল মাথা নাড়ল,না সূচক।
আমার একটা ঘড়ি পড়ে গেছে,দেখছ?
না, বিল্লাল বলল।
আমি আর লিংকন এদিক ওদিক খুজে পেলাম না।বাসায় চলে গেলাম।বিকালে শান্তিমত খেলতে পারলাম না।তখন পর্যন্ত মেহমানের ঘড়ির খবর নাই।মনে মনে আল্লাহ আল্লাহ করছি।সন্ধ্যার পরে ঘড়ি খোজা শুরু হল।আমি জানি না বলে সরে পড়লাম।রাতে পাশের বাসার মাসুদকে নিয়ে নামাজ পড়তে গেলাম।খুব করে আল্লাহ কে ডাকলাম।বাসায় এসে দেখি হুলস্থুল অবস্থা। বুয়া আসছে।আমার বোন বলছে, ঘড়ি হারায়ে আল্লাহ কে ডাকতে গেছিলা।বুয়া সব বলে দিছে।আমি ত থ।

পরে যা জানলাম,আমার ঘড়িটা বিল্লাল পেয়েছিল।আমি যে দুপুরে বের হয়ছিলাম এটা নিচতলার আরিফ ভাই দেখছিলেন।বিল্লাল ঘড়িটা পেয়ে বিক্রি করতে নিলে বুয়া সেটা দেখে ফেলেন।তারপরে কেড়ে নিয়ে বাসায় চলে আসেন আমাদের। ঘড়িটার মোটামুটি ময়না তদন্ত করে ফেলেছিল বিল্লাল। তারপরে ঠিক করা হয়।
মনে মনে ভাবি,তখনকার বুয়া কত সৎ ছিলেন।কলোনি র আশেপাশে আম্মাদের সাহায্য করতে যারা আসতেন,তারা সবাই ভাল।কখনো কাজ করে কি পাচ্ছেন তা নিয়ে হিসেব করতেন না, মন দিয়েই কাজ করতেন।আমাদের এক বুয়া ( মনোয়ারা) রেজা ভাইদের বাসায় কাজ করতেন।বাসায় আসলে মোটা বাবু ভাইয়ের গল্প জুড়ে দিতেন।এখন কার বুয়াগুলো এত কমার্শিয়াল চিন্তা ভাবনায়।আন্তরিকতার ধার কাছ 
দিয়ে নাই,আর কাজের বেলায় পুরোই ফাঁকিবাজ।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss