Sunday, March 27, 2016

থ্রী ব্রাদার্স


আশির দশকের শেষ দিকে চিটগাং নিউমার্কেটে একটা খাবারের দোকান ছিল। নাম ছিল থ্রী ব্রাদার্স পরবর্তীতে থ্রী বেগার্স বর্তমানে থ্রী ব্রাদার্স শাড়ির দোকান। ওই সময়ে যারা কলেজে পড়ালেখা করতো তারা বিশেষ করে ছেলেরা কম বেশী সবাই জানতো। জানতো কি করে পেট ভরে খেয়ে অল্প টাকা দিয়ে পার পাওযা যায়। আমি তখন ক্লাস টেনে পড়ি। কলনির এক ভাইয়ের সাথে মার্কেটে গেলাম। উদ্দেশ্য ঘুরাঘুরি করা। ও তখন ফার্ষ্ট ইয়ারে পড়ে। ঘুরাঘুরি শেষ। ২.৩০ টা বেজে গেছে। সাড়ে তিনটায় কলেজ বাস। আরও এক ঘন্টা সময় হাতে আছে। ক্ষিধাও লাগছে। ওরে বললাম ওডা ভোগ লাইগ্গে। ও বললো ভোগ লাইগ্গেনা চল তোরে লই এক জাগাত যাইয়ুম। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম টাকা আছে নাকি। সে বললো যে টাকা আছে তাতে মুটামুটি পেট ভরবে। 

তারপর নিয়ে গেলো থ্রী ব্রাদার্সে। আমি নিচে বসতে চাইলাম। ও বললো চল দোতলায় বসি। আমি তখনো কিছু বুঝি নাই। আমারে বললো কি খাবি? যে কোন একটা হলে চলবে। ও বললো আলুর চপ খেলে মোটামুটি ঘন্টাখানেক থাকা যাবে। আমিও সায় দিলাম। তারপরে দুইটা আলুর চপ আর দুইকাপ চায়ের অর্ডার দিল। যথারীতি আলুর চপ শেষ করে চা খেলাম। তারপর ও বয় ডাক দিল এবং ওকে পাঁচ টাকা দিয়ে বললো বিল নিয়ে এসো। বয় বিল নিয়ে আসলো। বিল দেখেতো আমি অবাক। মাত্র দুইটা চায়ের বিল!! আমি প্রতিবাদ করতে চাইলাম। ও আমার হাতে চাপ দিয়ে বললো চুপ থাক। আমি চুপ করে পেছনে দাঁড়িয়ে। ও ক্যাশ কাউন্টারে গিয়ে সাবলীল ভাবে বিল দিলো। বিল দিয়ে আমরা বের হলাম থেকে। হোটলের ম্যানেজারও বুঝতে পারলো না। হোটেল থেকে বের হয়ে ওকে জিজ্ঞাসা এইটা কি হইলো? স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিয়ে বললো এইটা কোন ব্যাপার না। পরে অনেক জনের কাছে শুনলাম এই রকম কাজ তারা প্রায়ই করে। এক সময় হোটেলটা বন্ধ হয়ে গেলো। সবার কি আফসোস!!

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss