চিটাগাং এর এক বড় ব্যবসায়ীর ছেলে ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত, ঢাকায় চিকিৎসাধীন, প্রতি তিন মাস পরপর বি+ রক্ত দেয়া লাগে। িএপ্রিল ২৯ এর রক্ত দান প্রোগ্রামের কারনে রোগীর স্বজন রা কলোনীতে যোগাযোগ করে। সে প্রেক্ষিতে ৯৭ এর ডিসেম্বরে আমার বন্ধু রানা সহ তিনজন রক্ত দিতে ঢাকা যায়। আবার মার্চে দেয়া লাগবে,রোগীর আত্মীয় স্বজন ব্যাপক সমাদর করে রক্ত দাতা দের। এবারের যাবো আমি ,দীপক দা আর মিজান ভাই। ৯৮ এর মার্চের ৮ বা ৯ তারিখে ঢাকায় রওনা দিবো সৌদিয়া এসি বাসে, টিকেট কাটা হয়ে গেছে এক দিন আগে আমার জ্বর শুরু। এ অবস্থায় আমার রক্ত দিতে ঢাকায় যাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমার বদলে নেওয়া হলো কলোনীর বাইরের সম্ভবত দক্ষিন পতেংগার কাশেম নামে এক ব্যাক্তিকে,গার্জিযান হিসেবে গেলেন কবির ভাই (লম্বা কবির ভাই)।
সেদিনই বিকেলে জ্বর একটু কম, বাজারের সালাউদ্দিন ভাইদের দোকানে আড্ডা দিচ্ছি, একটি ফোন এলো, সাথে সেই ভয়াবহ সংবাদ, দীপক দা ,মিজান ভাই আর কাশেম নামের ওই ব্যাক্তি যে কিনা আমার বদলে গিয়েছিলো তিনজনই ফেনীতে বাস একসিডেন্টে আর নেই, ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস প্রথম এই খবর টা পেলাম আমি, আর এ যাত্রায় কাশেমের পরিবর্তে আমার যাওয়ার কথা ছিলো, খবর টি শুনে আমার পিঠ দিয়ে মনে হলো চিকন একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল। কোন মতে জেকসের শাহনুর ভাইকে খবর টি দিয়ে উদভ্রান্তের মত বাসায় গিয়ে শুয়ে ছিলাম। পুরা কলোনী তে খবর রটে যায় মূহূর্তেই। কলোনী থমথমে হয়ে যায়। রাতে দীপক দার লাশ আসে, পুরা কলোনী কান্নায় ভেংগে পড়ে, দীপক দাকে দাহ করার সময় কবির ভাইয়ের কান্ন্া মনে পড়লে এখনো চোখে পানি এস পড়ে। ওই চারজনের মধ্যে উনিই বেঁচে ছিলেন।
আমার বদলে ঢাকায় রওনা হওয়া সেই কাশেমের কথা মনে হলে ,মনে হয় এখন আমি নিশ্চিত কট আউট থেকে বেঁচে যাওয়া এক ব্যাটসম্যান, বোনাস জীবন কাটাচ্ছি।
No comments:
Post a Comment