পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ আছে যারা তাদের ব্যক্তিত্বের গুনেই অন্যকে আকর্ষন করতে পারে। এমনকি ভিন্ন মতের মানুষকেও কাছে টানতে পারে। সদা হাস্য মুখ, পরোপকারে ক্লান্তিহীন, সজ্জন, সদালাপি এমন মানুষের সংখ্যা আমাদের সমাজে দিন দিন কমে আসছে। উপরোক্ত গুনাবলীর অধিকারী-বন্ধু দুইটির একজনের নাম ‘‘হাফিজ” অন্য জন ‘‘সওগাত”।
স্কুল জীবনে দেখেছি হাফিজ কে অত্যন্ত মেধাবী ও তীক্ষ্ম বুদ্ধি মত্তার অধিকারী যদিও স্কুলের গতানুগতিক পরীক্ষায় সেই অনুপাতে কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি। আর এই জন্য তাকে কখনো ব্যকুল ও দেখিনী। বরংচ জীবনকে সব সময় স্বভাবিক, সামাজিকতায় আচ্ছন্ন, রসময় ও উচ্ছৃল করে নেওয়ার প্রবনতা হাফিজকে এক অপূর্ব ব্যক্তিত্বে রূপদান করে। হাফিজের মুখস্ত বিদ্যার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। কোন কিছু না বুঝেও সে অনার্গল মুখস্ত করে ফেলত-অনেকটা লোহা খেয়ে লোহা হজমের মত। অসম্ভব পরিশ্রমি ছিল সে। ভাল ফুট বল খেলত। তার হাতের লেখা ছিল অসাধারন। যে কোন সংগঠনিক কাজেও খুব গুছিয়ে করতে পারত। খুব স্টাইলীস্ট ছিল। আধুনিক যে কোন স্টাইলকে সে ফল করতে ভালবাসত। স্কুল জীবনের অনেক টা সময় দুজন এক সঙ্গে কাটিয়েছি-আজ স্মৃতি চারনার এই মুহুর্তে তার আগামী অগ্র যাত্রা, সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
সওগাতের সাথে আগেও পরিচয় ছিল। কিন্ত বেশী ঘনিষ্ঠ হই-মুহাসিন কলেজে-বি এস সি (পদার্থ, রসায়ন, গণিত) এ ভর্তির সময়। আমাকে সবচেয়ে বেশী অবাক করত-বিজ্ঞানের অনেক কঠিন কঠিন বিষয়গুলো কয়েকবার পড়ে-সে নিজের মতকরে গুছিয়ে লিখতে পারত। সময় পেলে আমরা-পাহাড়ের উপরে কমনরুমে যেয়ে-ও কেরাম খেলত আর আমি টেবিল টেনিস খেলতাম এবং এক একজনে 5/6 টি করে বড় বড় সিংগারা গিলতাম। সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় হলো-বি এস সি তে আমরা 117 জন পরীক্ষা দিয়াছিলাম-মাত্র 21 জন পাশ করেছিলাম। তার মধ্যে আমারও সওগাতের নাম ছিল। আমার এই বন্ধুটি না থাকলে-10 বারেও আমি বি এসসি পাস করতে পারতাম কিনা সন্ধেহ? তার সব চেয়ে বড় গুন হচ্ছে সবার সাথে সু সম্পর্ক রাখার অদ্ভুৎ ক্ষমতা। আর একটি গুন হচ্ছে-পারত পক্ষে সবার উপকার করা। তাই দেশ-বিদেশে যেখানেই গিয়াছে সেখানেই বন্ধুর সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে তার সময় জ্ঞান ও সময়ানুবর্তিতা অতুলনীয়। যে কোন আয়োজনে সে সবার আগে উপস্থিত থাকতো। সে এখনও আমাদের কাছে সনামধন্য-গায়ক, বন্ধু বৎসল, উদার হিৃদয়, পর উপকারী, ভোজন বিলাসী ও আপ্যায়নপটু সওগাত রয়েগেছে এবং থাকবে।
No comments:
Post a Comment