সাব্বির খেলা পাগল মানুষ ছিলো।খেলার নাম শুনলে সে স্থির থাকতে পারেনা। সেটা ফুটবল বা ক্রিকেট যেটাই হোক। খেলাধুলা র সব খোজ খবর তার কাছে থাকতো। চিটাগাং থেকে দু দিনের জন্য ঢাকা আসলেও ঢাকা স্টেডিয়াম গিয়ে লীগের খেলা দেখে আসতো। আর চিটাগাং ফুটবল লীগের সিজনাল ভিআইপি পাশ তার কাছে সবসময় থাকতো। এখনো সে খেলাধুলো পছন্দ করে, কিন্তু ব্যবসায় বানিজ্য আর পারিবারিক ব্যস্ততার কারনে খেলাধুলা র তেমন খোজ রাখতে পারেনা বা টিভিতেও দেখার সময় হয়না
তাছাড়া সমসাময়িক কালের ফুটবল বা ক্রিকেট তার ভালো লাগেনা, এখনকার এইসব আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট গুলোতে অর্থের ঝনঝনানি আর গ্ল্যামার জগত টাই আছে, খেলাটির প্রতি যে দরদ থাকতে হয় সেটি দেখা যায়না। একেবারে রোবোটিক ভাব সাব।
এর চেয়ে সাব্বির টেন স্পোর্টস এ ৩০/৩৫ বছর আগের ক্লাসিক ক্রিকেট বা ফুটবল দেখতেই পছন্দ করে। গতরাতেও এমন কিছু, প্রায় ২৫/২৬ বছর আগের ইতালিয়ান লীগের কিছু খেলা দেখছিল সাব্বির,খেলার এক পর্যায়ে দেখা গেল হেড দিতে গিয়ে এক প্লেয়ারের মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত পড়ছে। সাথে সাথে সাব্বির ফিরে গেল ২৫/২৬ বছর আগে।
সাব্বির সারাদিন খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, শীত কালে ক্রিকেট, ভলিবল আর গ্রীষ্ম বর্ষায় ফুটবল। কোন খেলাতেই সে তেমন ভাল ছিলনা কিন্তু আন্তরিকতা ছিল। প্রতিদিনের মত আজো সাব্বির সন্ধ্যায় ফুটবল খেলে বাসায় এসেছে। কিছুক্ষণ পরেই মিরার ফোন, উদ্বেগ ভরা গলায় সে সাব্বির কে জিজ্ঞেস করল তার মাথার কি অবস্থা, রক্ত বেশি বের হয়েছে কিনা, এখন কেমন লাগছে ইত্যাদি ইত্যাদি। সাব্বির এই টাইপ কথা গুলো শুনে বেকুব হয়ে গেল, মিরা কি বলছে কিছুই বুঝতে পারলো না সাব্বির, কারন তার তো কিছুই হয় নি, সম্পূর্ণ সুস্থ। পরেরে মিরা যা বলল তা হলো মিরা দের পাশের বাড়ির টিনা এসে মিরা কে বলে গেছে যে, সাব্বির ফুটবল খেলতে গিয়ে মাথা ফাটিয়ে রক্তারক্তি অবস্থা করে রেখেছে। এ কথা শোনার পর থেকেই মিরা সাব্বির এর জন্য অস্থির হয়ে পড়েছিল। আর এখন সাব্বির এর সাথে কথা বলে মিরা টেনশন ফ্রি হলো। আর এদিকে সাব্বির টিনারর উপর রাগ হলেও, পরে মনে হলো টিনার এ গুজবের কারনে মিরার কাছ থেকে এই আকুল করা ভালবাসা পেল।
গো.. ও......ল, টিভি ভাষ্যকারের চিৎকারে সাব্বির বর্তমানে ফিরে এলো।
No comments:
Post a Comment