Tuesday, April 26, 2016

একটি মাত্র বাইরে যাওয়ার মত জিন্স প্যান্ট


একটি মাত্র বাইরে যাওয়ার মত জিন্স প্যান্ট , তাও আবার পায়ের দিকে যায় যায় অবস্থা।ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দেখলো জুতা জোড়াও কৃত্রিম শ্বাষ প্রশ্বাসে আছে ।পকেটে আছে মাত্র ২৫ টাকা। মিরাজ ভাবছিলো একটা গোল্ড লিফ ধরাতে ধরাতে যাবে,কিন্ত জুতা সেলাই করতে হবে।বাকী ২০ টাকা বাস ভাড়া লাগবে। আজ তার নিশার সাথে দেখা করার কথা। শালা পকেটে নাই পয়সা, তার আবার প্রেম।নিজেকে নিজেই গালি দিলো মিরাজ।

একাউন্টিং থেকে মাষ্টার্স করে বেকার বসে আছে মিরাজ। এখনো কোন চাকুরী জুটাতে পারেনি। এদিক সেদিক করে কোন মতে দিন চলে। প্রেম করা মিরাজের জন্য আসলেই বিশাল বিলাসিতা।

নিশা বিশেষ প্রয়োজনে মিরাজকে ডেকেছে,খুব তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে, বাস ষ্ট্যান্ডে গিয়ে দেখে এক টা বাসেও উঠার মত অবস্থা নাই, অগত্যা বেবী টেক্সিতেই যেতে হবে, ভাড়া টা নিতে হবে নিশার কাছ থেকেই।


-----দেখো মিরাজ, বাসায় আমার বিয়ের জন্য ছেলে দেখেছে,এখন তুমি কিভাবে কি করবা আমি জানিনা।হাতে সময় খুব কম।আর হ্যা,আমি পালিয়ে বিয়ে করবোনা,সুতরাং এ কথাটি মাথায় এনোনা।এক নিশ্বাসে কথাগুলো বলে গেলো নিশা।

--মিরাজ নিশাকে বুঝাবার চেষ্টা করল । সে খুব কাতর ভাবে বললো নিশা আরেকটু অপেক্ষা করা যায়না। নিশা গটগট করে বলে উঠল আমার কিছুই করার নেই মিরাজ।কথাটির মধ্যে কেমন যেন তাচ্ছিল্য ভাব ছিল। তোমার যে পজিশন , তোমার কথা যে কথা বাসায় জানাবো সেই পরিস্থিতিও নেই।বলল নিশা।
আমার জন্য কি আর ১টা বছর অপেক্ষা করা যায়না? নিশার চোখের দিকে তাকিয়ে করুন কণ্ঠে অনুরোধ করল মিরাজ।
আমার পক্ষে সম্ভব নয় বলে উঠে দাড়াল নিশা।

১৫ দিন পড়েই--------
আজ নিশার বিয়ে। ইচ্ছে করলে মিরাজ ঝামেলা করতে পারতো।কিন্ত কোন কিছু দিয়েই আটকালোনা নিশাকে মিরাজ। আসলে মিরাজ পরে জানতে পেরেছে বড় লোক ছেলেটির সাথে ভিতরে ভিতরে নিশার আগেই সম্পক হয়েছিলো। নিশার আগ্রহেই বিয়েটা আরো দ্রুত হয়ে গেল।অনেক কষ্ট নিয়ে সাগর পাড়ে বসে আছে মিরাজ,মন চাইছে চিৎকার করে কাঁদতে। কষ্টে চোখ দিয়ে পানিও আসছেনা।

৬ বছর পর…….
নিজের বাসার ব্যালকনীতে বসে আছে মিরাজ।না হাতে আজ ২টাকার গোল্ডলিফ নেই,সেখানে স্থান নিয়েছে ডানহিল। একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে খুব উচু পজিশনে জব করছে সে।চিটাগাং ছেড়েছে বছর তিনেক হবে। কিন্তু অনেক দিন পর আজ খুব বেশি মন খারাপ মিরাজের।আজ ৮ মে।নিশার জন্মদিন।খুব মনে পড়ছে ওকে।ওর সাথে জমা স্মৃতিগুলো কিছুতেই ভুলতে পারছেনা। আজ মিরাজের সব আছে।মোটা অঙ্ক স্যালারী পায় ডলারে,কোনো কিছুই অভাব নেই । বিয়ের বাজারে একদম উচু সারিতেই মিরাজ।কিন্তু আজ যে নিশা নেই। আকাশের দিকে তাকালো মিরাজ।গোল চাদটা থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে মেঘ। নিজের জীবন থেকে কষ্টের কালো মেঘ সরে যাওয়া পর্যন্ত নিজের কাছে রাখতে পারলাম না নিশাকে।আনমনে ভাবলো সে।

অথচ আজ মিরাজের নিজের আকাশের চাদে কোনো মেঘ নেই।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss