বহু দিন ধরে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখিনা, অথচ একসময় সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখাটা ছিল বিনোদনের অন্যতম প্রধান উপায়। স্কুল পালিয়ে নেভী হলে গিয়ে সিনেমা দেখা ছিল এক বিশাল এডভেঞ্চার। আর এক টিকেটে দুই ছবি মার্কা সিনেমা দেখতে গেলেতো তটস্থ থাকতাম পরিচিত কেউ দেখে ফেলল কিনা।
আমি সবচেয়ে বেশী সিনেমা দেখেছি সম্ভবত বারিক বিল্ডিংস্থ সানাই সিনেয়া হলে, এরপর সাগরিকা হলে। বনানী হলে ছবি খুব কম দেখতাম, তুলনামূলক টিকেটের দাম বেশি ছিল সেখানে। একটিকেটে দুই ছবি দেখার জন্য বিখ্যাত ছিল বনানি হলের উল্টো দিকে উপহার সিনেমা সংলগ্ন রিদম হল।জলসায় মাঝেমধ্যে দেখতাম। আর আলমাসে যেতাম প্রিয় কাউকে নিয়ে। তবে যখন ক্লাস নাইনে পড়ি তখন আলমাস হলের বক্সে (ভি আইপি সিট)বসে ঈদের পরদিন আমরা ছয় বন্ধু মিলে আলমগির শাবানার " রাঙা ভাবী " ছবিটি দেখেছিলাম। ঈদের পরদিন দলবেঁধে সিনেমা দেখা ছিলা আবশ্যিক একটা বিষয়। হলে গিয়ে সিনেমা দেখায়য় বেশিরর ভাগ সময় আমার সংগী ছিল Mamunur Rashid Rashed পলাইয়া / মরাইয়া রাশেদ, সিনেমা শেষ করে কলোনি তে ঢুকার সময়ই সে যে সিনেমা টা দেখেছি ওই সিনেমাটার একটা গান শুরু করে দিত। আহ! কোথায় সে দিনগুলো।
চাকুরী জীবনের প্রথম দিকে (৯৯ সালে)ঢাকায় এসে খুব যখন একা একা লাগতো তখন সময় কাটানোর জন্য সিনেমা হলে যেতাম। বসুন্ধরাগ্রুপ এ দশ বছর ( ৯৯ থেকে ২০০৯) চাকুরী জীবনের শেষ দিকে আমার অফিস ছিল বসুন্ধরা সিটির ৭ তলায়, তার উপর তলায় ছিল স্টার সিনেপ্লেক্স, অথচ কোন দিন যাওয়া হয়নি বা যেতে ইচ্ছে হয়নি। ঢাকায় সিনেমা দেখতাম আনন্দ, মধুমিতা বা বলাকা হলে। ব্যাচেলর ছবিটি আমি ৫/৭ বার দেখেছি বলাকাতে ( অবশ্য তখন আমি নিজেই ব্যাচেলর)।
শেষবার সিনেমা হলে গিয়েছিলাম বলাকা হলে " মোল্লা বাড়ির বউ" ছবিটি দেখার জন্য, সময়টা ২০০৫ সালে, তখন আমি সদ্য পরাধীন আর সাথে ছিল আমার বউ।
সিনেমা হল গুলো সব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এখন ড্রইং রুমের সোফায় বসে স্যাটেলাইটে বা বিছানায় শুয়ে ল্যাপটপ অথবা স্মার্ট ফোনের ইউটিউব এ সব পাওয়া যায়। আর কোন প্রজন্ম বুঝবেনা স্কুল কলেজ ফাঁকি দিয়ে অথবা প্রিয় মানুষ টিকে সংগে নিয়ে সবার চোখে ধুলো দিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা যে কত বড় এডভেঞ্চার।
No comments:
Post a Comment