তখন খুব সম্ভবত আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি।।বাবার খুব ইচ্ছে ছিল আমাকে মাওলানা টাইপের কিছু বানাবে।।কারন বাবা ৯১ঘূর্ণিঝরের পর অনেকটাই আধ্যাত্মিক মাইন্ডের হয়ে গিয়েছিলেন।।যেটা এখনও বাবার মাঝে বিরাজমান।।তো যা বলছিলাম মায়ের সাথে আলোচনা করে বললো ওকে মাদ্রাসায় দিয়ে দেই কি বলো??মা বললো এখন কি আর এসব হবে,প্রথম থেকে যদি দিতে তাহলে না হয় আশা করা যেত,কিন্তু এখন???মা বাবাকে বললো দেখ চিন্তা করে পরে না হিতে বিপরীত হয়।।যেই কথা সেই কাজ,হাজার অনিচ্ছা সত্তেও বাবা বছরের মাঝামাঝি আমাকে স্কুল থেকে নামিয়ে ফেলেন এবং স্কুলের পাশের মাদ্রাসায় আমাকে ভর্তি করিয়ে দিলেন।।শুরু হলো আমার জেলখানার জীবন।।ভোর চারটায় আমার ঘুম থেকে ওঠা,,তারপর নামায,,পরে কোরআন তেলওয়াত,,তারপর নয়টায় মাদ্রাসা,,দুপুরে নামায তারপর খাওয়া এবং পরে আবারও পড়া,,বিকেলে নামায পরে আলোচনা,,তারপর নামায,,এরপর পড়া,,তারপর নামায শেষে খাওয়া এবং ঘুম।।তারপর আবার গতানুগতিক।।মনে হচ্ছিল আমার সমস্ত স্বাদ আল্লাদ শেষ।।কোথায় স্কুল জীবনের মজা আর কোথায় বন্দী জীবন।।খুব খারাপ লাগতো আমার যখন দেখতাম আমার বন্ধুরা সবাই বিকেলে ফুটবল খেলছে আর আমি আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত।।মাকে বললাম মা আমি আর যাবো না,আমার ভালো লাগেনা।।আমাকে আবার স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন।।মা বললো ঠিক আছে তোর বাবার সাথে কথা বলবো।।কিন্তু এতে হিতে বিপরীত হলো বাবা সিদ্ধান্ত নিল আমাকে মাদ্রাসার হোস্টেলে দিয়ে দিবে।।কথা শুনে আমি বাসার বাহিরে চলে গেলাম এবং সেই রাতে আমি আর বাসায় ফিরলাম না।।পরের দিন বাবা আমাকে খুজে নিয়ে বাসায় ফিরলো এবং মজার মজার অনেক খাবার নিয়ে এসে আমাকে খাওয়ালো এবং বোঝালো।।কিন্তু কে শোনে কার কথা,আমার একই জবাব "না"।।শেষ মেষ বাবা রেগে আমাকে দিল মাইর।।দৌড়ে এসে মা আমাকে বাচালো এবং বাবাকে উল্টো ঝারতে লাগলো,বললো তুমি ওর বয়সে কেমন ছিলে সেটা একবার ভেবে দেখ।।বাবা পরে ভেবে দেখলো না আমার ""এই লাউ কোন দিন কদু হবে না""শেষে আমাকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনলো মানে মাদ্রাসা থেকে নামিয়ে ফেললেন এবং পরে আবারও মুক্ত জীবনে ছেড়ে দিলেন মানে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিলেন।।
সরি বাবা ""লাউ থেকে কদু হতে পারিনি বলে""

No comments:
Post a Comment