ছাত্র হিসেবে কখনোই ভাল ছিলামনা। এস.এস.সি পাস করার পর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সিটি কলেজে ভর্তি হতে পারলামনা। বাবার ইচ্ছায়, মনের বিরদ্ধে শাহীন কলেজে ভর্তি হতে হবে। শাহীন কলেজের বাঁধাধরা নিয়ম আমার পছন্দ ছিলনা। বন্ধু হিসেবে স্টীল মিল থেকে পেলাম স্কুলে পড়াকালীন সময়ে যাকে অপছন্দ করতাম সেই নিরুকে। দুজনে সাইকেল চালিয়ে কলেজে যেতাম। আমার সব বন্ধুরা উত্তর দিকে যেতো, আমরা দু’জন দক্ষিণে। আস্তে আস্তে নিরুর সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করল। আমাদের ক্লাসের ৩০ জন স্টুডেন্ট-দের মধ্যে নিরু কিছুটা ব্যতিক্রমী গুনের অধিকারী ছিল। ও আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট এর শাহীন কলেজের অধিনায়ক ছিল।
বি.এন.সি.সি এর ক্যাপ্টেন ছিল, গীটার বাজাতে জানত, কোথা থেকে জানি ব্রেক ড্যান্স-ও শিখেছিল। তারপর মারামারিতেও ছিল পটু। আমি কিছু আনুকুল্য পেতাম বন্ধু নিরুর কল্যাণে। আবার কলেজের মেয়েরাও তাকে পছন্দ করতো। দেখতে নিরুর চাইতে খুব একটা খারাপ ছিলামনা। কিন্তু কেন জানি মেয়েরা নিরুকেই পছন্দ করতো। কোন একদিন যদি নিরু কলেজে না আসত, মেয়েরা আমাকে জিজ্ঞেস করতো নিরু কোথায়? রাগ লাগলেও ভাগ্যকেই দুষতাম। ফ্যাশন-এ আমার বন্ধু ছিল অনন্য। ধীরে ধীরে নিরুর সাথে আমার এমন বন্ধুত্ত তৈরী হয়েছিল। তাকে না দেখলে আমার মনে হতো আজকে কিছু একটা বাদ পড়েছে। অনেক মজার মজার ঘটনা আছে বন্ধু নিরুকে ঘিরে। এত কথা বললাম আজ এইজন্য যে আমার বন্ধু নিরুর জীবন সংকটাপন্ন। নিরুর হার্ট-এ পাঁচটি ব্লক ধরা পড়েছে। একটি প্রায় ৯৫%। আগামী রোববার সম্ভবত নিরুর অপারেশন হবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ঢাকায়। বন্ধু নিরুকে আমরা ভীষণ ভালবাসি। তুই সুস্থ হয়ে তোর মেয়েদের এবং আমাদের কাছে ফিরে আয়। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
No comments:
Post a Comment