২৮/০১/২০১৬ তারিখ বৃহস্পতিবার যেহেতু কসাই, সকালের নাস্তা, বিকালের নাস্তা, পানি সব আগেই ঠিক করা হয়েছে। এখন বাকি কাঁচাবাজার ও অন্যান্য টুকিটাকি কাজ সন্ধ্যার আগেই সারতে হবে। তাই আগে থেকে প্ল্যান করে রাখছিলাম অফিস থেকে লাঞ্চের পর পর বের হয়ে যাবো।
সকালে অফিসে গেলাম এবং সবাইকে বলে রাখলাম আমি বেশিক্ষন থাকবো না। সকাল সাড়ে দশটায় অপু ভাই আমাদের অফিসে আসার খবর পেলাম। গেলাম উনার সাথে দেখা করতে। উনি আমাকে দেখে বলে তুই এখনো অফিসে? অপু ভাইয়ের সাথে দেখা করে আমার রুমে এসে সব গুছিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় ভাবলাম আমাদের কোরিয়ান ভদ্র মহিলাকে বলে যাই, না হয় উনি মাইন্ড করতে পারে। ম্যাডামের রুমে গিয়ে দেখি অপু ভাইয়ের সাথে মিটিং করছেন। আমি কিছু বলার আগেই আমাকে দেখে অপু ভাই বললো ম্যাডাম ওকে আজকে ছেড়ে দেন, আগামিকাল আমাদের একটা প্রোগ্রাম আছে। ম্যাডাম সাথে সাথে বললো যাও।
আমিও দেরি করলাম না সোজা আগ্রাবাদ চলে আসলাম। আগ্রবাদ এসে ব্যাংকের কাজ সেরে টং দোকানে গেলাম স্পেশাল চা খেতে। এমন সময় লিটন ফোন দিলো " অডা আইটেম ওজ্ঞা বারান ফরিবো"। জিজ্ঞাসা করলাম কি? ও বললো "পায়েস গইরলি কিকি লাগিবো বাবুর্চিরত্তুন ইস্টিমিট ল"। তারমানে আইটেম আর একটা বাড়লো। দিলাম বাবুর্চিরে ফোন। বাবুর্চি প্রথমে রাজি হয়নি পরে চাপাচাপিতে রাজি হলো এবং ফোনে লিস্ট দিলো। তারপরে সুমনকে ফোন দিলাম পায়েসের জন্য ১২০০ কাপের জন্য। সাথে জুবিলি রোড় থেকে টক দই আনতে বললাম। দুপুরে বাসায় এসে খাওয়ার পর একটু রেস্ট নিলাম। বিকাল পাঁচটায় লিটনের অফিসে গেলাম। তারপর সেখানে টিংকু, সজিব, রাজিব এলো। পাহাড়তলি বাজার থেকে কাঁচাবাজার, ডিম আর রাতের মুরগী কিনতেই ৭.৩০ টা বেজে গেলো। তারপরে পিকআপে করে বাজার সহ ওদের পাঠিয়ে দিয়ে আমি আর লিটন আবার বাজারে গেলাম পায়েসের লিস্ট নিয়ে। মোটামুটি সব কমপ্লিট।
রওয়ানা হবো এমন সময়ে বাবুর্চির লোকে ফোন দিল কেরোসিন তেল লাগবে। সেটাও ফোন করে ম্যানেজ করলাম। গাড়িতে যাওয়ার সময় লিটন বললো ক্ষিধা লাগছে বিকাল থেকে কিছু খাওয়া হয় নাই। তাই বড়পোলে দাঁড়িয়ে দোকান থেকে পানি আর কাষ্টার্ড কেক কিনে ওর গাড়িতে বসে খেলাম। স্পটে যাওয়ার পর সবাইকে দেখে সব কষ্ট ভুলে গেলাম। আমরা যাওয়ার কিছু সময় পরে বন্যা আসলো তার বাহিনি নিয়ে। তারপর সবাই মিলে গেলাম টং দোকানে গেলাম চা খেতে। কি অসাধারন অনুভুতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। টং দোকানে চায়ের কাপ কম ছিলো বিধায় এক সাথে সবাইকে চা দিতে পারছিল না। তাতেও কারো দুঃখ ছিলো না। বিল কে দিবে তা নিয়ে কারো কোন টেনশন ছিলো না। সবাই যেন একই পরিবারের সদস্য।
সেদিন মনে হয় চা বিস্কুটের সঠিক হিসাব দোকানদারেও দিতে পারে নাই। দোকানদারও খুশি ছিলো এত রাতে এতো কাষ্টমার দেখে। চা খাওয়ার পরে সবাই মিলে ছোটখাটো আড্ডা দিতে লাগলো। আর একটু পর পর তাগাদা দিচ্ছে রাতের খাবার কখন রেডি হবে। রাতের খাবার যখন রেডি হলো সবাই কি উৎসাহ নিয়ে খেলো যারা তখন ছিলোনা তারা কল্পনাই করতে পারবে না। সবাই লাইন ধরে প্লেট নিয়ে খাবার নিচ্ছে। লিটন একে একে সবার প্লেটে খাবার দিচ্ছে। অসাধারণ। সেদিন ছিলো ডাঃ কুদরত ই এলাহি উজ্জলের ছেলের জন্মদিন। ও বললো বাসায় খাবে। ওকে বললাম সবাই খাচ্ছে তুইও খা। সবার এমন উৎসাহ দেখে ও আর না করতে পারলো না।
রাতের খাবার সেরে সবাই যে যার মত চলে যায়। থাকলাম শুধু আমরা চার জন (আমি লিটন, সজিব আর রজিব)। রাতে কসাই আসলো গরু জবাই করলো। রাতে দুইবার কারেন্ট চলে যায়। রাত দেড়টা কি দুইটায় পলাশ এসে আমাদের আমাদের অবাক করে দিলো। বাবুর্চি বড় এক ডেকচিতে বানায়ছিলো সবাই কিছুক্ষণ পর পর চা খাচ্ছি। সবাই পরের দিনের আড্ডার স্বপ্ন দেখছে আর আমরা চায়ের সাথে মশার কামড়ও খাচ্ছি। মোটামুটি ভাবে রাত পার করলাম।
২৯/০১/২০১৬ তারিখ সকাল সাতটা সবাই আড্ডায় আসার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আর আমি রাজিবকে বসিয়ে বাসায় যাচ্ছি...........চলবে
No comments:
Post a Comment