নতুন এক মার্কেটের মেইন গেটের উপর থেকে সজোরে নিচে নামা বাতাসের নিচ দিয়ে ৫ বার হাঁটালাম।একবার ঢুকি আর গ্লাস চিচিং ফাঁক কইরা আমারে অভ্যার্থনা জানায়।
..মুগ্ধ হয়ে বাসায় ফিরলাম
আর আজকের পোলাপাইন জন্মের পর যে প্লে নার্সারিতে থাকে, সেখানেই নাকি 24/7 এসি
টেকনোলোজি চেইঞ্জ, এরা কি বুঝবে
একসময় আমরা ডায়াল-আপ ব্যবহার করতাম নেট কানেকশানের জন্য
রাতেরবেলা নেট কানেকশান নিতে গেলেই মডেম থেকে গড়গড় এক আওয়াজ বের হতো
পুরা এলাকা বুঝে যেত এই বাসা থেকে নেটে ঢুকা হচ্ছে।।
আমরা নোকিয়া-৩৩১০ ব্যবহার করা জাতি সারাদিন মুগ্ধ হইয়া স্নেইক-গেম খেলতাম
এরপর আসলো, সেটের ভিতর টর্চ-লাইট
অবাক ব্যাপার
তারপর আসলো সেটের ভিতরে ক্যামেরা
আজ নর্মাল ক্যামেরার থেকে পাওয়ারফুল ক্যামেরা মোবাইল সেটের ভিতরে
আফসোস এখানে নেই... আফসোস লাগে যখন বাসার এ্যালবাম গুলো অযত্নে পরে থাকতে দেখি
লাস্ট কবে এ্যালবাম কিনেছি?
ছোটবেলায় এ্যালবামের আঠালো পাতা সরিয়ে একটা একটা করে ছবি, আঁকাবাঁকা করে রাখতাম,ফিতাওয়ালা ক্যাসেট একটার উপর একটা বসিয়ে শোকেসের উপর সাজিয়ে রাখতাম... এই ফিলিংটা আজকের ছেলেরা কোথায় পাবে
এই জেনারেশানের কে কবে প্রেমপত্র পেয়েছেন বলেন তো?
পেলে কিভাবে পেয়েছেন শুনি?
ইনবক্সে?...এসএমএস’এ??
আমাদের সময় নিউ মার্কেটে প্রেমপত্র লেখার প্যাড পাওয়া যেত... এক একটা পাতা টিস্যু-পেপারের মতো মসৃণ
সুগন্ধি কলমও পাওয়া যেত...
ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ডায়াল করা টেলিফোন সেটগুলো দেখেছেন জীবনে?
কত যে স্মৃতি আছে কলোনীতে ইন্টারকম ডায়াল করা সেটগুলোতে।।
মিসড-কল দেয়া আপনারা কি আবিষ্কার করেছেন? এগুলো আমরা সেই ৮০/৯০ সাল থেকে চিনি
১টা রিং বেজে লাইন কেটে যাওয়া মানে... “কি করো লক্ষ্মীটি,কাছে থাকলে ফোন কর জলদি?”
২ টা রিং বেজে লাইন কেটে যাওয়া মানে... “মিস-ইউ, পারলে ফোন দিও”
৩ টা রিং বেজে লাইন কেটে যাওয়া মানে... না এটা হতো না... কারণ বাবা/মা ফোন ধরে ফেলতেন ততক্ষনে
‘এই কে?’
“স্লামালিকুম আঙ্কেল/আন্টি...মেয়ে কন্ঠি করে অথবা কেউকে দিয়ে কথা বলিয়ে আপনজন এ ডেকে আনা”
এই সময়গুলো কোনভাবেই ফিরে আসার নয়…
ক্রস-কানেকশনের নাম শুনেছেন?
হয়তো রাতে ফিসফিস করে আলাপ করছি, মাঝখান থেকে হুট করে ক্রস-কানেকশন হয়ে গেলো
“ভাবী আর বলবেন না,ছেলেটা যা যন্ত্রনা করে, সারাক্ষন বাসার কাছেই আড্ডা,মেয়ের কোচিং যাওয়ার পথে সবসময় আড্ডা দেয়..”
ভিসিআর দেখেছেন? এক গাদা ফিতা ক্যাসেট সহ ভিসিআর ভাড়া করে এনে সারাদিন ব্যাপী ম্যারাথন সিনেমা দেখা, আবার অন্যা কারো সাথে ক্যাসেট এক্সচ্যাঞ্জ করে দেখা।। আহা।।
আজকাল আমার নার্সারী পড়ুয়া মেয়ে যেভাবে মোবাইল থেকে SHAREit বের করে আমার ওয়াইফ এর মোবাইলে তার পছন্দের গেম পাঠাতে উদ্ধুত হয় তখন ভালোই লাগে আর মনে মনে ভাবি আহা আমাদের কলোনীতে থাকা অবস্থায় যদি এই টেকনোলজি থাকতো তবে কি করতাম।তখনকার সময় কারো কাছে বিদেশ থেকে পাঠানো ভিডিও গেমস দেখলে চোখ জলজল করত,তাকে অন্য কিছুর লোভ দেখিয়ে/নানারকম ফুসলিয়ে খানিকক্ষণের জন্য একটু গেমস্টা খেলে নিতাম,মনে মনে ভাবতাম আহা আমার কেহ কেনো বিদেশে থাকেনা।কিছু বড় হওয়ার পর আসলো ব্রিক গেম,আহা কি মজা।কিন্তু এখন কি সেই মজা আর পাই কোন গেমস এ??
না বাচ্চাকাচ্চা না...আমরা অনেক দিক দিয়ে এগিয়ে...অনেকক
টেকনোলোজি দেখা এক জিনিষ... আর টেকনোলোজি নিজ চোখে চেইঞ্জড হতে দেখা, আরেক জিনিষ
আজ আমাদের সেই সময়ের জিনিষগুলো যদি যাদুঘরে থাকতে পারে… তাহলে এই আমরা, সেই চেইঞ্জগুলো দেখে এখনও বেঁচে থাকা জেনারেশানটাও যাদুঘরে থাকার মতো মূল্যবান ।।
(পুরো লিখাটা মৌলিক নয়,আংশিক সংগৃহীত)
No comments:
Post a Comment