আমাদের (১৯৯১ ব্যাচ) প্রিয় বন্ধু তুমান। মেধাবি ছিল। সব সময় ১/২/৩ এ থাকত। কবিতা আবৃতি, রচনা প্রতিযোগিতা, ব্রতচারি সবকিছুতে সরব উপস্থিতি। আমরা C2 থেকে C11 এ আসার পর ওর সাথে ঘনিষ্টতা ২ গুন হল। ছোটবেলায় যত রকম দুষ্টামি করা যায় সব কিছুই ওর সাথে করছি। আমি খেলাধুলায় মোটামুটি ছিলাম কিন্তু স্কুলে বার্ষিক প্রতিযোগিতায় কখনও অংশ নিতাম না। যে একটা পুরস্কার পাইছি সেটাও তুমানের কারনে। তিন পায়ে দৌড়। সম্বভত ক্লাশ থ্রির ঘটনা। বিশাল (!) একটা শিল্ড পাইছিলাম। সম্ভবত ক্লাস টুতে থাকতে একদিন ক্লাসে দুষ্টামি করে বলছিলাম, তুমান ক্লাসে তোর সাথে আর কথা বলবনা। বেচারা ভাবল সত্যি সত্যি ওর সাথে আড়ি নিচ্ছি। সাথে সাথে ওর আর্তনাদ আম্মু দেখনা আনালক আমার সাথে আর কথা বরবেনা বলে। আমি বারবার বলছিলাম ক্লাসে আর কথা বলবনা। ক্লাসে কথা বললে কেপ্টেনরা নাম লিখে রাখত আর টিচার আসলে জমা দিত।
বেচারা কড়া শাসনে থাকত। আমাদের মত যখন তখন বের হতে পারতোনা। আমরা যখন পাইন্না খেলা খেলি ও তখন জানালা দিয়ে করুন চোখে তাকিয়ে থাকত। মারবেল, তাস খেলা তো অকল্পনিয়। ওর অনুরোধে একবার পুকুরে গোসল করতে নিয়ে গেছিলাম। যেতে আসতে হইছিল অনেক লুকিয়ে। শবেবরাত এর রাত , তারাবি রাত বা চাঁদ রাত এর আনন্দ কখনও উপভোগ করতে পারেনি। কেডেটে টিকল। কিছুটা দুরত্ব বাড়ল। এরপর তো আমরা কলোনি থেকে বের হয়ে গেলাম। সব শেষ দেখা সিটি কলেজের পেছনে, ইন্টারের পর। ওর হাতে সিগারেট। আবাক হইছি তবে বুজতে দেইনি। আমি কেমনে জানি সিগারেটের হাত থেকে বেঁচে গেছি। অথচ ওই রাতগুলোতে দুষ্টমি করে কত সিগারেট খাইছি। বিশেষ করে মোর। গলা ঠান্ডা হয়ে যেত। তুমান চিটাং ভার্সিটিতে বিবিএ তে ভর্তি হইছে সেটাও জানছি। শেষ খবরটা পেলাম বাতাসে......। ওহ। অনেক দিন পর ভূতের ডিম বাবুর সাথে দেখা। জিজ্ঞাস করলাম কিভাবে? জানলাম গাড়ী এক্সিডেন্ট।
২৪ জুলাই তুমানের মৃত্যু বার্ষিকি..............
No comments:
Post a Comment