Wednesday, June 22, 2016

ক্লাস নাইনে পড়ি


ক্লাস নাইনে পড়ি,স্কুল পালিয়ে আমি,দুলি আর মরা রাশেদ খালপাড়ের এফ টাইপ ১ নং বিল্ডিং এর সামনে গার্ড পোস্টে (যা দোতালা সমান উচ্চতায় অবস্থিত ছিল) আড্ডা মারছি আর আগুন ফুকাফুকি চলছে, গার্ড পোস্ট টি ছিল কলোনির শেষ সীমানায় একেবারে বাউন্ডারি ওয়ালের সাথে, বাউন্ডারির ওপারেই ছিল বিস্তীর্ণ টমেটো ক্ষেত।

ওই টমেটো ক্ষেতে বসে চার পাঁচ জন ছেলে ক্ষেতের পরিচর্যা করছিল। এদিকে আমরা অলস বসে গল্প করছিলাম, কথায় বলে অলস মাথা শয়তানের ফ্যাক্টরি, তাই এ কথা প্রমাণ করার জন্যই ক্ষেতে কাজ করা ছেলে গুলোকে শুধু শুধু আমরা পাথর মারলাম।আর বিনিময়ে ছেলে গুলো যতরকম আন্তর্জাতিক গালি আছে দিতে লাগলো। শুধু গালি দিলেই হতো, ক্ষেতে ছিলো টমেটো র সুপার ডুপার বাম্পার ফলন, এরপরে ওই বাম্পার ফলন টমেটো দিয়ে শুরু করল সম্মিলিত টমেটো আক্রমন, আর ওই চার পাঁচ জনের সাথে আরো তিন চার জন যোগ দিলো, সাত আট জনের টমেটো আক্রমনে আমরা তিন জন পুরাপুরি দিশোহারা, হাতে আর কোন পাথরও নাই যে পালটা আক্রমন করব, গার্ড পোস্ট থেকে নীচে নেমে আত্মরক্ষা করব সে উপায়ও মিলছেনা, গার্ড পোস্টের খোলা জানালা দিয়ে পাকা টমেটো এসে তিনজনেরই স্কুলের সাদা শার্ট একেবারে রঙিন। নীচে নামতে গেলেই আক্রমনের মাত্রা আরো বেড়ে যাচ্ছে। কি আর করা, গার্ড রুমে জড়োসরো ভাবে বসে আল্লাহ আল্লাহ করছি, এদিকে আক্রমনের মাত্রা আরো দ্বিগুণ হয়ে গেলো সাথে ইন্টারন্যাশনাল গালাগালিও ডাবল।

অবশেষে আল্লাহ পাক আমাদের ফরিয়াদ শুনলেন, কিচ্ছুক্ষণ পর ঐ ক্ষেতের মালিক এসে ছেলেগুলোকে যুদ্ধ বিরতিতে বাধ্য করলেন। আর আমরাও পরাজিত সৈনিকের মত টমেটো রাংগা শার্ট পড়েই বাসায় গেলাম আর শার্ট কিভাবে টমেটো রাঙা হলো এ জন্য বাসায় আরেক দফা লাঠি চার্জের স্বীকার হলাম।

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss