আজ আমাকে সবার সাথে পরিচয় করানোর প্রচেষ্টায় আমার বাবা-মায়ের কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরার প্রয়োজন মনে করছি। আমার বাবা-মায়ের পাঁচ সন্তান, আমি বাবু , নিপা, টিপু, এ্যানি ও রিংকি। বাবা কাষ্টিং এন্ড ফরজিং শপ এ চাকরীরত ছিলেন। কলোনীর বিভিন্ন কাজ এবং মসজিদের সেবাও নিয়োজিত ছিলেন। আমাদের বাসা ছিলো E-7-Gতে। যে বিল্ডিং এর সামনে ছিলো কলোনীর একমাত্র স্লিপ। কতো পেন্ট যে ফুটো হয়েছে সেখানে তার হিসাব দেয়া মুসকিল। টিপুতো হাত দু টুকরো করেছিলো টারজান খেলতে গিয়ে। সে অনেক কাহীনি, পরে বলি। আমার বাবা ছিলেন অসম্ভব/বেসম্ভব একজন রাগী মানুষ। কিন্তু ছিলেন চরম এক আড্ডাবাজ। ডাঃ কাকা (আমিনুল হক সিদ্দিকী) সপ্তাহে মিনিমাম চারদিন রাত দশটার পর আমাদের বাসায় এসে বাবার সাথে আড্ডা দিতেন। চা পর্ব চলতো আর আমার মা যতক্ষন না ঘুমে ঢলে না পড়তেন তার মানে চায়ের সাপ্লায় যতক্ষন না বন্ধ হতো আড্ডা ততক্ষন চলতো। ওনি ছিলে পরোপকারী, এমন পরোপকারী যে নিজের ক্ষতি হলেও পিছ পা হতেন না। কেহ এক্সিডেন্ট করলে বা কারো কোন অসুখ করলে সবার আগে ঝাপিয়ে পড়তেন তিনি। দিনের পর দিন তিনি পার করে দিতেন অথছ নিজের ঘরের লোকজনের খাবার আছে কিনা সেই দিকে তার নজর ছিলো না। আমরা ও কিছু বলতে পারতাম না কারন সিদ্ধান্ত নেয়ার বেলায় সব সময়ই তিনি ছিলেন স্বাধীন।
আমরা সত্যিকার অর্থে তার মতো বাবা পেয়ে গর্বিত।
আরো একটা পরিচয় তার আছে, তা হলো তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধকালীন কমান্ডার।
আমার মা সদা সহজ সরল এবং কোন প্রকার ঝামেলা বিহীন একজন সাধারন মানুষ। খুবই সাধারন কিন্তু এটায় তাকে আমাদের মাঝে তুলে ধরলো অসাধারন করে। আমাদের পড়াশুনা, খাওয়া দাওয়া ইত্যাদির প্রতি তার ছিলো বিশেষ মনোযোগ। বাসায় ছিলো সর্বোক্ষনিক মেহমান, কিন্তু তিনি বিন্দুমাত্রও বিরক্ত হতেন না। মানুষকে রেধেঁ খাওয়াতেও তিনি পছন্দ করেন।
আমরা গর্বিতো যে আমরা তাদের সন্তান।
দোয়া করবেন তারা যেনো আজীবন স্বাধীন থাকেন এবং সুস্থ ও শান্তিতে থাকেন। আমিন

No comments:
Post a Comment