৮৭ সাল ক্লাস সেভেনে পড়ি, বিকেল বেলা সি টাইপ মাঠে যাচ্ছি খেলতে, সবাই দেখি খেলছে আর আমাদের দুলি মাঠের স্লিপারে ( তখন মাঠে একটা স্লিপার ছিল) বসে খুব মনোযোগ দিয়ে নিউজপ্রিন্ট কাগজে ছাপানো একটি পাতলা বই পড়ছে। অনেকটা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর স্টাইলে, আমিও কৌতুহল চাপতে না পেরে দেখতে গেলাম দুইল্যা কি বই পড়ে। যা বুঝার বুঝে গেলাম। সমাঝদার পাঠক গন নিজ দ্বায়িত্বে বুঝিয়া লন আমাদের দুলি বিদ্যাসাগর কি বই পড়ছিলেন। আমাকে প্রশ্ন করিয়া বিব্রত করিবেন না।
এখন ক্লাস এইটে ৮৮ সাল তখন, ক্লাসের ২য় পিরিয়ড চলছে, ক্লাস নিচ্ছেন মরহুম হক স্যার ( আল্লাহ উনাকে বেহেশত নসীব করুক), আমরা যথারীতি থার্ড বেঞ্চে বসে আছি, আমাদের জ্ঞানী Riman Babu সেই নিউজপ্রিন্ট কাগজের বই নিয়ে এসেছে, স্যার পড়াচ্ছেন পাঠ্যপুস্তক, আর আমি, রিমান, ভুতের আন্ডা বাবু আর বুড়া মিয়া আছি নিউজপ্রিন্ট বই নিয়া,এক পর্যায়ে বই নিয়া টানাটানি শুরু হয়ে গেল, ফলে যা হওয়ার তাই হলো, বই সহ আমরা চার জন স্যারের হাতে ধরা, বই দেখে স্যারের স্বভাব সুলভ ভঙ্গিমায় উক্তি " এ্যারে তুরা তো অনও মেট্রিকও হাশ করোছ নো, এই বয়সেই ডাক্তারি বই হড়া শুরু করি দিসোত কিল্যাই", এই বলেই চার জনের উপর প্রচন্ড লাঠি চার্জ, চার জনই মার খেয়ে একেবারে কাত। ভাবলাম মারের পর্ব শেষ, কিন্ত না, এবার স্যার ধরলেন এই বই কে আনছে। আমরা কেউই স্বীকার করছিনা, যেহেতু স্যারের ক্লাসে আমি বহু আকামের দাগী আসামি, তাই পুরো সন্দেহ টা পড়লো আমার উপর, আমার উপর আরেক দফা প্রচন্ড লাঠি চার্জ এবং ক্লাস থেকে বহিস্কার, তারপরও আমি মুখ খুলিনি বই টি কে এনেছে।
স্কুল জীবনে আমাদের বন্ধুত্ব টা এতো অটুট ছিল যে, কেউ কোন আকাম করলেও স্বীকার করতাম না কে করেছে শত মার খাওয়ার পরও।
No comments:
Post a Comment