তিন তলা L-Shape বিল্ডিং নাম তার BH-1 মানে হলো Bachelor Hostel-1.একটি মাত্র রুম সাথে বিশাল করিডোর(ব্যাচেলরদের জন্য রুমের তুলনায় করিডোর এত বিশাল কেনো তা আজো আমার নিজের প্রতি প্রশ্নই রয়ে গেলো)।এক পাশে ৬/৭টি মোট ১২/১৩ করে রুম একটি ফ্লোরে,মাঝখানে বড় একটি ডাইনিং হল,যা পরবর্তিতে পার্টিশন দিয়ে দুভাগ করে দুই ফ্যামিলিকে দেওয়া হয়। ও হ্যাঁ আমি যতদুর জানি ব্যাচলর হোস্টেলে একজন দুজন ফ্যামিলি নিয়ে আসতে আসতে ফ্যামিলি হোস্টেল হয়ে গেলো,আমি অবশ্য ছোটকাল থেকে বেশীরভাগ ফ্যামিলিই দেখেছি নিচের তলায় গুটিকয়েক ব্যাচেলর ছাড়া।শুধুমাত্র নিচের ডাইনিং হলটা রেখে দিয়েছিলো,অনেক অফিসিয়াল(যাদের বাসা কলোনির বাহিরে) দুপুর বেলায় আসত খেতে আর বাবুর্চী ছিলো বিখ্যাত মোখলেস ভাই।মাঝে মাঝে আমাদের মা খালাদের অনুরোধে পিকনিক এ মোখলেস ভাই রান্না করে দিত।বিশেষ করে উনার রান্না করা সবজী ছিলো অসাধারণ।
সিড়িগুলো ছিলো দুই পাশে ফাঁকা।নিচে সিড়ির পাশেই ছিলো একটি পরিত্যক্ত পানির ট্যাঙ্কি।বোধ হওয়ার পর থেকে ট্যাঙ্কি টি সেই পরিত্যক্ত অবস্থায়ই ছিলো,শুধুমাত্র ৯১ এর ঘূর্ণিঝড়ে সামান্য পরিমান সরে গিয়েছিলো।এই ট্যাঙ্কি নিয়ে আমাদের মাঝে নানারকম ভয়াল ধারণা কাজ করত।এই ট্যাঙ্কির আশে পাশে প্রায়ই গুইশাপের বিচরণ ছিলো, আমরা সিড়ি থেকে পাথর মেরে গুইশাপের মনযোগ আকর্শন করতাম।
বিল্ডিং এর পিছনেই ছিলো মসজিদ।প্রথম প্রথম সিড়ি গুলোর রেলিং এর উপরে লাগানো কাঠগুলো ছিলো মসৃন,আমরা সিড়ি দিয়ে না নেমে এই কাঠে পিছলা খেয়ে খেয়ে নামতাম।তবে আজান পড়ার সময় নামতাম না এক বিশেষ ভয়ে/কারণে।
তৃতীয় তলায় ছাদে উঠার জন্য একটি লোহার সিড়ি ছিলো।ওই সিড়ির জয়েন্টে হাঁটু ভাজ করে রডে পা আটকিয়ে মাথা নিচে দিয়ে দোল খেতাম।ছাদে উপরিভাগে আবার ছিল লোহার পাতের ঢাকনা।মাঝে মাঝে লুকিয়ে লুকিয়ে ছাদে উঠতাম বন্ধুদের নিয়ে,বেশি কিছুনা একটু বাতাস খেতে উঠতাম আর কি !!!
দ্বিতীয় তলা এবং তৃতীয় তলার কর্ণারএর বাসিন্দাদের দেখলে হিংসা হতো।তারা কাঠ দিয়ে করিডর ব্লক করে একটি রুম বানিয়ে ফেলতো।দরজা থাকতো আবার তালাও মেরে রাখা হতো।আবার যারা মাঝখানের বড় হল রুম গুলোতে থাকত তাদের দেখেও হিংসা হত।কবে যাবো আমরা অই বড় রুমগুলোতে।যেতে পারলাম তখন যখন স্টীলমিল বন্ধ হয়ে গেলো।তৃতীয় তলায় শুধু আমরা ঐ বড় এক রুম সাথে ছিলো আগের মত ছোট আরেক রুম ২০০১সালে,পরব্ররতিতে চলে যাই সি টাইপে।
নিচ তলার করিডোরগুলো পরবর্তিতে আমাদের জন্য ছিল ক্রিকেট খেলার জায়গা।বল সরাসরি বাহিরে গেলে আঊট,গড়িয়ে গেলে চার এভাবেই খেলতাম দিনের বেলায়।আর বিকাল বেলায় তো ছিল বিল্ডিং এর সামনে মাঠ।
(জাভেদ ভাই Tambourine Man এর আহবানে সাড়া দিয়ে এই লিখা)



No comments:
Post a Comment