গতকাল বিকালে চাচাকে দেখতে যাবো। বন্যা কে কথা দিয়েছিলাম। রিপনের সাথেও কথা হয়েছিলো, একসাথে দুইজন যাবো। বনানি থেকে মগবাজার রাস্তাটা এতটাই জ্যাম ছিলো, যেতে ইচ্ছা করছিলো না। যা হোক গেলাম। ছোট্ট একটা কেক নিলাম, নুজাইমার জন্য।
অনেক বছর পর চাচার সাথে দেখা হলো। এখন বয়স হয়েছে, চাচার সেই শরীরটাও নেই। হাতে, চলা ফেরার জন্য লাঠি।
অনেক কথা হলো চাচার সাথে। বাবার কথা জিজ্ঞাসা করলো। এক পর্যায়ে বাবার সাথে, মোবাইলে কথা বলিয়ে দিলাম। খুব খুশি হলো দুজনেই।
চা এর টেবিলে, বন্যা বললো, আব্বা, রেজা ভাই আপনের জন্য কেক আনছে। ছোট বাচ্চার মত চাচা, নুজাইমাকে সাথে নিয়ে কেকটি কাটলো। এবং নিজে খেলো। আমি বসে বসে ভাবছিলাম, মানুষ একটি সময় সত্যি শিশু হয়ে যায়!!!!
আজ সকাল থেকে মনটি ভালো লাগছিলো না। অফিস করতেও মন চাচ্ছিলো না!! মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে খালার বাসায় চলে যাই। ৫ই মার্চ, মার শাহাদাত বার্ষিকী। তাই নিয়ে খালার সাথে আলাপ করছিলাম। এক সাথে বাড়ী যাবো। দুপুরে ভাত খেয়ে নিচে নেমেছি। ঠিক তখন উপর থেকে ডাক আসলো, তাড়াতাড়ি উপরে, খালার কাছে গেলাম। তারপর---।
আমি প্রস্তুত ছিলাম না!!! এই প্রস্তুতি কারো থাকেনা!! এই জগতের সবচেয়ে নির্মম সংবাদ।
ছুটে গেলাম প্রিয় দুখি মানুষ গুলির কাছে, আমার মত আরো অনেক আপনজন, ছুটে গেছে সেখানে।
মন ভেংগে যাওয়া সব হৃদয় বিদারক দৃশ্য।
অবুঝ বাচ্চার মত কেদে যাচ্ছে, বন্যা এবং তার বাচ্চারা। আজ, আকাশটা ভেংগে, বন্যার মাথার উপর পরেছে!!! কি আছে এখানে সান্ত্বনা দেওয়ার!!!
খুব দ্রুতই চাচার নিথর দেহটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো, তার সব চেয়ে আপন মানুষটির কাছে। যিনি এই জীবনের তার প্রিয় মানুষটি জন্য, শেষ অপেক্ষার প্রহর গুনছে!!! আর কখনো, প্রিয় এই মানুষটি, তার কাছে ফিরে আসবেনা। এখানেও সান্তনা দেওয়ার কিছু নেই!!!
বড় কষ্ট!! যার যায়, একমাত্র সেই বুঝে!!
আমরা যারা বাপ/মা হারিয়েছি, আল্লাহ তুমি তাদের সবাইকে, এই কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা দিও।
রাব্বুল আল আমিন, আমরা বাপ/মা হারা সন্তানরা, তোমার দরবারে দুই হাত তুলেছি, তুমি, তোমার অসিম রহমতে, উনাদের জান্নাত বাসি করো।
No comments:
Post a Comment