সাব্বিরের সাথে এক শপিং মলে হঠাৎ করে মিরার দেখা, মিরা ভূত দেখার মত চমকে উঠল,যদিও অল্পক্ষনের মধ্যেই নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো, বুদ্ধিমতী মেয়ে (এখন মহিলা বলা যায় অবশ্য), যার নজর থাকে সাত আসমানের উপরে সে জানে কোন পরিস্থিতিতে কি করতে হয়। আড় চোখে মিরা সাব্বিরকে মেপে ফেলল, এখনো আগের মতই, একেবারে নরমাল, কোন বাহুল্য নেই চলাফেরায়। শরীরের দিক থেকে শুধু ভুড়ি টুকুই বেড়েছে সাব্বিরের।তেমনি মিরা আগের মত স্লিম থাকলেও আগের সেই লাবন্য নেই, আসলে দুজনের বয়সই তো বেড়েছে। শপিং মল মোটামুটি ফাকা, দুজন হাটছে আর নিজেদের মধ্যে টুকটুক করে কথা বলছে, দু জনেরই স্কুল জীবনে সেই কথা বলতে বলতে বাসায় ফিরার স্মৃতি মনে পড়ল। দুজনেই কিছুটা আনমনা। কথায় কথায় জানতে পারল মিরা ধানমন্ডি থাকে, নিজেদের ফ্ল্যাট, গাড়ি,স্বামী বড় বিজনেসম্যান অর্থাৎ মিরা যা চেয়েছিল, সাত আসমানের উপর, তাই পেয়েছে, সাব্বির নিজের ব্যাপারে তেমন কিছু না বললেও মিরার বুঝতে বাকী রইলনা যে সাব্বিরও এখন সাত আসমান উপরের লোক।
কাকতালীয় ভাবে সেই শপিং মলে রুনিও এসছে, এবং সাব্বিরের সাথে দেখা, সাব্বির রুনিকে মিরার কাছে এক্স কলিগ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিল আর মিরাকে রুনির কাছে তার স্কুল জীবনের বান্ধবী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিল। রুনি তার স্বামিকে নিয়ে ইংল্যান্ড থাকে এখন, দু মাসের জন্য দেশে এসেছে। তিনজন মিলে অনেক্ষন আড্ডা, খাওয়া দাওয়া, কেনাকাটা করল্। শেষে সাব্বিরের জরুরী কাজের কারনে দু জনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। একটি সময় দুটি ভিন্ন পরিস্থিতিভেদে মিরা আর রুনির জন্য যে সাব্বির পাগল ছিল, ইচ্ছে করত সাব্বিরের সারাদিন মিরা বা রুনির পাশে বসে থাকি। আর আজ কি অবলীলায় সাব্বির দু জন কে রেখে চলে যাচ্ছে। মিরা আর রুনি দু জনই সাব্বিরের চলে যাওয়া দেখছে, কি সাধারণ চলাফেরা, অথচ কোথায় যেন ব্যাক্তিত্ব ঝড়ছে, চলাফেরায় বুঝাই যায় সাত আসমানের উপরের বাসিন্দা সে।
নিজের অজান্তে কি দু জনের একটু দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো সাব্বিরের জন্য?
No comments:
Post a Comment