এই লিখার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু লিখা ঠিক হবে না। কারন আমার ম্যাগাজিন পড়ার শুরু এই আনন্দ বিচিত্রা নিয়ে।আনন্দ বিচিত্রার ঈদ সংখ্যা, ফটো সুন্দরী দের নিয়ে সংখ্যা,বর্ষ পত্র এগুলো দেখতাম আমাদের বাসায় আসত।কখনো আতিক ভাইদের বাসা,কখনো নিধি আপাদের বাসা কিংবা রিনির আম্মার কাছ থেকে।কিন্তু ছোটদের সেগুলো ধরা নিষেধ ছিল।তাই আমার কাছ থেকে দূরে রাখা হত।
আমাদের বাসায় একটা টি টেবিলে বিচিত্রাগুলো গুছানো থাকত।আপা গুছায়ে রাখতেন।আমি দুপুরে না ঘুমিয়ে সেগুলো পড়তাম,বিশেষ করে কোন হিন্দি সিনেমা এক নম্বর কোন টা দুই নম্বর এ আছে।কাহিনি কি নিয়ে,কে কে অভিনয় করছেন।আতিক ভাইয়ের কাছ থেকে যেগুলো আনা হত সেগুলার উপরে থাকত ববিতা,সুচরিতা, সোহানা ইত্যাদি ঢাকাই ছবির নায়িকাদের ছবি।উনার একটা ম্যাগাজিন আমি অনেকবার পড়ছি,সেটা হল, সোহানার আসন সুশক্ত।মজার ব্যাপার হল, পড়ে আমি আবার গুছায়ে রাখতাম কিন্তু আপার মত হত না,কিভাবে যেন ধরা খেয়ে যেতাম।বকা খেতাম অনেক।তারপরেও অভ্যাস যেত না।
মনে মনে ভাবতাম, দাড়াও, আমিও কলেজে উঠি।তারপরে আমিও কিনব এই আনন্দ বিচিত্রা।কিন্তু আমি স্কুলের গন্ডি পেরোবার আগেই আনন্দ বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যায়।আর কেনা হয় নি।
আম্মার ধারনা ছিল এগুলো পড়লে আমি পড়াশোনায় খারাপ হয়ে যাব।তাই আম্মার চোখ এড়িয়ে পড়তে হত।কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হল,আপার কেনা অনেক বিচিত্রা আমাদের অনেক পরিচিত মানুষ নিয়ে আর ফেরত দেয়নি।অথচ আমি ভাবছিলাম,বড় হবার পর পড়ব।বাকি যেগুলো রয়ে গিয়েছিল সেগুলো আজও আমি যত্ন করে রেখে দিয়েছি।কেন জানি মনে হয়, বইগুলো তে কলোনি র অনেক মানুষের স্পর্শ রয়ে গেছে।একটা সময়ের স্পর্শ আছে যা হয়ত হারিয়ে গেলে কোন দিন ফিরে পাব না

No comments:
Post a Comment