Wednesday, April 6, 2016

‘কেউ কাউকে ত্যালায়না’ উমামার এই পোস্টটার সাথে আমিও ৯৯% একমত


‘কেউ কাউকে ত্যালায়না’ উমামার এই পোস্টটার সাথে আমিও ৯৯% একমত গত কয়েকদিন ইতিবাচক চর্চা (তৈল জাতীয়) বিষয়ক পোস্ট অনেক কম। এইজন্য আমি প্রথমত গভীর উদ্বেক প্রকাশ করছি। মনে হয় মামুন ভাইয়ের শরীর খারাপ অথবা মন খারাপ অথবা উনি উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন অথবা মামুন ভাই তৈল সংকটে পড়ছে। রেজা ভাই এবং জসীম ভাইকে বিশেষভাবে অনুরোধ করছি মামুন ভাইসহ অন্যরা যদি তৈল সংকটে পড়ে তাহলে আপনারা উনাদের কিছু তেল ধার অথবা ফ্রী দিবেন। আশা করছি আগামীকাল থেকে আমরা আবার মামুনভাইসহ অন্যদের কাছ থেকে তৈল বিষয়ক পোস্ট পাব নতুবা আমি তীব্র নিন্দা জানাতে বাধ্য হবো। যাই হোক আমি আমার এই পোস্টে কি তেল মাখবেন এবং কিভাবে মালিশ করবেন সেইদিকে কিছুটা আলোকপাত করলামআশা করছি এই পোস্টটা মামুন ভাই এবং অন্যদের কিছুটা হলেও কাজে আসবে।

হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলেনবাস্তবিক তৈল সর্বশক্তিমান, যাহা বলের অসাধ্য, যাহা বিদ্যায় অসাধ্য, যাহা ধনের অসাধ্য, যাহা কৌশলের অসাধ্যতাহা কেবল তৈল দ্বারা সিদ্ধ হইতে পারে।তিনি আরও বলেন— ‘যে তৈল দিতে পারিবে তাহার বিদ্যা না থাকিলেও প্রফেসর হইতে পারে। আহাম্মক হইলেও ম্যাজিস্ট্রেট হইতে পারে, সাহস না থাকলেও সেনাপতি হইতে পারে এবং দুর্লভ রাম হইয়াও উড়িষ্যার গভর্নর হইতে পারে।

চারদিকে যে তেলের বন্যা দেখা যাচ্ছে তাতে যদি সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা না হয় তাহলে যে কোনো মুহূর্তে তেলসংক্রান্ত মহাবিপর্যয় বা সুনামি দেখা যেতে পারে। তেলের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, তেল মর্দনের সনাতনী পদ্ধতি এবং মর্দনে ব্যবহার্য তেলের গুণগতমানের কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা বা গাইড লাইন না থাকার কারণে তৈলজাত রোগবালাই মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে

তৈল মর্দনের অর্থ বোঝে না এমন লোক বর্তমান সমাজে নেই বললেই চলে। তেলের বাহারি ব্যবহারের হাজারো উপকার নিয়ে লিখতে গেলে বিরাট এক মহাকাব্য তৈরি হয়ে যাবে। তেল কত প্রকার এবং কী কী অথবা তেল কোন কোন অঙ্গে কিরূপে মর্দন করলে কতটুকু সুফল পাওয়া যাবে তাও ইদানীংকালের তেলবাজরা মোটামুটি জেনে ফেলেছেন। আসুন আমরাও জেনে নেই কি তেল মাখবেন এবং কিভাবে মালিশ করা উচিত? কারণ সবাই তৈল মর্দন করতে এবং তৈল মর্দন পেতে সীমাহীন আবেগ-উল্লাস হৃদয়ে ধারণ করেন বটে কিন্তু প্রকাশ্যে বলে বেড়ানআমি কোনো তেল মারামারিতে নেই অথবা আমাকে তেল মারার সাধ্য কোনো বাপের বেটা বা বেটির নেই।



কি তেল মাখবেনঃ

1.       নারকেল তেল - সাধারনতঃ নারকেল তেল-এ কোন রকম রেশ বা চুলকানি হয় না, ত্বকের জন্যে নিরাপদ। একটু বড়দের জন্যে নারকেল তেলের সাথে হলুদ আর নিমপাতা মিশিয়ে ফুটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে এটি ঠাণ্ডা, তাই রাত্রে এবং শীতের সময় ব্যবহার না করাই ভালো।

2.       সরিষার তেল - বাংলার ঘরে ঘরে এই তেলের জয়জয়াকার। ১০০ মিলি. তেলে ৮/৯ কোয়া রসুন, ১ চামচ কালোজিরে, ১ চামচ যোয়ান, অল্প কয়েকটি লবঙ্গ মিশিয়ে ঢিমে আঁচে ৫/৬ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে মালিশের তেল হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কালোজিরে এবং যোয়ান ঠাণ্ডা-লাগার হাত থেকে রক্ষা করে। তবে এই তেল মেখে রোদ্দুরে বেরোলে ট্যান পড়ার সম্ভাবনা থাকে। আর গরম কালে এটি শরীর গরম করে দেয়।

3.       জনসন ও জনসন তেল - ভিটামিন ই যুক্ত, মিনারেল তেল। খুব তাড়াতাড়ি ত্বকে প্রবেশ করে। ট্যানিং-এর সমস্যা হয়; আর খুব শুকনো ত্বকের জন্যে খুব ভালো কাজ করে না।

4.       ডাবর লাল তেল এটিও বেশ গরম, গ্রীষ্মের দিনে ব্যবহার করা অসুবিধের। প্রাকৃতিক জড়িবুটি দ্বারা তৈরি, সুন্দর গন্ধ যুক্ত। ঘুমনোর আগে মাখালে ভাল ঘুম আনে। কম্পানি দাবি করে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, এই তেলের নিয়মিত ব্যবহারে শিশু বেড়ে ওঠে তাড়াতাড়ি এবং শক্তিশালী হয়। আমি বর্ষা থেকে শীত-এ রাত্রে এটি ব্যবহার করেছি।

5.       জলপাই তেল এটি না বেশি ঠাণ্ডা, না বেশি গরম। সমস্ত ঋতুতে উপযুক্ত। ত্বকে দাগ, ট্যানিং হয়ে গেলে বিশেষ উপকারি দাগ তোলার জন্যে। তবে এটি একটু বেশি ঘন, তাই গ্রীষ্মের দিনে রোমকূপের মুখ বন্ধ করে দিতে পারে। আর আসল জলপাই তেল অনেক সময় একটু দামি হয়ে যায়। এই তেলটিতেও কোন রকম র্যামশ বা চুলকানি হয় না।

6.       আমন্ড তেল এটিও একটু বেশি ঘন। মালিশের তেল হিসেবে বিশেষ প্রচলিত নয়। তবে দ্রুত ত্বকের ভিতর শোষিত হতে পারে। রোদে বের হলে ট্যানিং-র সমস্যা হয়ে থাকে।

কিভাবে মালিশ করা উচিৎঃ

যদিও লেখা পড়ে শেখার থেকে ইউটিউব দেখে নেওয়া সুবিধা, তাও একটু বলে দি

# ২০-৩০ মিনিট মালিশ করা উচিৎ
# প্রথমে তেল হাতে নিয়ে ঘষে ঘষে একটু গরম করে নিয়ে হাত বা পা থেকে শুরু করা উচিৎ
# ধীরে ধীরে গতি বাড়ানো এবং তারপর ধীরে ধীরে শেষ করা উচিৎ; কখনই হঠাৎ করে শেষ করা উচিৎ নয়
# হাত কনুই-এর উপরের অংশ গোল করে ঘুরিয়ে, কনুই থেকে কবজি অবধি একবার গোল করে ঘুরিয়ে ও একবার লম্বা বরাবর, প্রতিটা আঙ্গুল কে টেনে টেনে মালিশ করা উচিৎ।
# পা হাঁটুর নীচের অংশ গোল করে ভিতর দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে; উপরের অংশ গোল করে বাইরের দিকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এবং পায়ের চেটো সমান করে এবং আঙ্গুল গুলি টেনে টেনে করতে হবে
# পেট- নাভির দুপাশে লম্বাভাবে দুটি হাতের তালূ রেখে অর্ধবৃত্তাকারে একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে ও বিপরীত দিকে ঘুরিয়ে করা উচিৎ।
# বুক দেহের সমান্তরালে দুটি তালু রেখে বইএর পাতা সজা করার মত বাইরের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে করা উচিৎ।
# পিঠ শিরদাঁড়ার দুপাশে হাতের তালু রেখে বাইরের দিকে টেনে টেনে মালিশ করা উচিৎ।
# কখনই খুব জোরে বা খুব আস্তে চাপ দেওয়া উচিৎ নয়। প্রতিটা স্ট্রোক হওয়া উচিৎ চাপমুক্ত কিন্তু দৃঢ়।


(পুরোটা মৌলিক নয় বেশিরভাগই সংগৃহীত এবং সংকলিত)

No comments:

Post a Comment

Comments

Not using Html Comment Box  yet?

No one has commented yet. Be the first!

rss