গত বছর ফেসবুকে আমার ম্যারেজ ডের ছবিতে Nazmul Huda ভাই কমেন্টস করেছিলেন " আমাদের আতিক এখন অনেক বড় হয়ে গেছে", উত্তরে আমি বলে ছিলাম " আমি যতই বড় হই না কেনো আমি সেই কলোনির লুঙ্গী পড়া আতিকই আছি"।
এখানে স্বঘোষিত "কবি আতিক" লুঙ্গী পড়া বলতে খুব কাছের মানুষ বুঝাচ্ছে বা ঘরের ছেলে বুঝাচ্ছে।
এই" ঘরের ছেলে"কথাটাই আমার বউ বুঝতে চায়না, মহল্লার ভিতরের দোকানে লবন চিনি আনতে যাবো তাও প্যান্ট পড়ে যাওয়ার জন্য চিল্লাচিল্লি করে। আর ঢাকার বাইরে কোথাও গেলেতো লুঙ্গী নিতেই দেয়না। ব্যাগের মধ্যে ট্রাউজার ভরে দেয়,বলে হোটেলে লুঙ্গী পড়ে থাকলে নাকি আনস্মার্ট লাগে। আহ! এরা যদি লুঙ্গী র মাহাত্ম্য বুঝতো।
যখন ব্যাচেলার ছিলাম তখন আমার চাচাতো ভাই দের সাথে মিরপুরে এক ফ্ল্যাট বাসায় থাকতাম, সবাই তখন ব্যাচেলার। আর চাচাতো ভাই গুলো অল্প কিছু দিন আগে গ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছে, গ্রাম থেকে আসলে কি হবে, তারা ছিল আমার মত সারা জীবন শহরে থাকা ছেলের চেয়েও ড্যাম স্মার্ট, তিন তলা বাসা থেকে নীচ তলায় নামলেও তারা প্যান্ট লাগায়, আর আমি যদি কোন দিন লুঙ্গী পড়ে নীচে নামতাম তারা আমার সাথে হইচই লাগাতো, লুঙ্গী পড়ে নীচে গেলে নাকি তাদের নাকি প্রেস্টিজ ফুটো হয়ে যায়। এরেই বলে " দু দিনের যোগী, বলে লুংগী নাকি আনস্মার্ট সংগী"।
কলোনি তে ছেলেদের জাতীয় ড্রেস ছিল লুঙ্গী, প্যান্ট পড়া মানেই দূরে কোথাও যাওয়া। এমন কি কলোনির ভিতরে প্রেমিকার সামনেও লুঙ্গী পড়ে যাওয়ায়ও কোন বিধিনিষেধ ছিলনা।
একদিন সবুজ চেক লুঙ্গী, সবুজ সাদা স্ট্রাইপ শার্ট পড়ে কলোনি তে ঘুরাঘুরি করছিলাম, পরনের স্পঞ্জ জোড়াও ছিল সবুজ মিশ্রিত।এটা দেখে আমাদের অপু ভাইয়ের ছোট ভাই Abdullah Al Mahbub টিপুর মন্তব্য ছিল " আতিক ভাই দেখি আজকা পুরা কমপ্লিট ম্যান"। আসলে আমি সেদিন খেয়ালই করিনি যে, সবই সবুজ রঙের মিশ্রণ ছিল। আর খেয়াল করলেও কিছু করার ছিলনা।ভাই টিপু, সে সময় সম্ভবত কলোনির কারোই (দু একজন বাদ দিলেও)বাছবিচার করে পোষাক পড়ার সুযোগ বা সাধ্য ছিলনা। যা পাইতাম বা যোগাড় হইত তাই পড়তাম।
তবে কলোনির অনেকেরই নাকি ঘুমের মধ্য লুঙ্গী নাকি লুঙ্গী থাকতোনা, খুলে গলার মালা হয়ে যেত।
( মোটা বাবু ভাই যদি এই পেজে লেখালেখি করত তাহলে এ গলার মালা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত বয়ান দিতে পারতো)।
---যুগযুগ জড়িয়ে থাকুক লুঙ্গী আমাদের কোমরে।
No comments:
Post a Comment