csm colony page এর যখন আবির্ভাব তখন থেকেই রিপন ভাইকে নিয়ে কিছু লিখব লিখব করেও আমার লিখা হয়ে উঠেনি। উঠেনি বললে ভুল হবে একটু সময়ের অপেক্ষায় ছিলাম এবং সেই সময়টা পেলাম আর অমনি লিখতে শুরু করলাম। তবে আমি রিপন ভাইয়ের মত রস কস দিয়ে বা গুছিয়ে লিখতে পারিনা।
যদি ভুল হয় দয়া করে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
আমার দেখা সিএসএম কলোনীর সেরা মানুষ(রিপন ভাই)।আমি উনাকে সবসময়ই মহাপুরুষই বলি। এমনকি গ্র্যান্ড আড্ডাতে ভাবীকে(রিপন ভাইয়ের বউ) ও বলেছিলাম যে, ভাবী জীবনে অনেক বড় একজন মানুষ পেয়েছেন। কিন্তু ভাবী বলেছিলেন তুমি তোমার ভাইকে কতটুকু চেন!
ভাবীকে বলেছিলাম, উনাকে আমি আমার জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার আগে থেকেই চিনি আর জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেতো আরও ভাল করে চিনি।
এইরকম আরো অনেক কথা হয় কিন্তু এক পর্যায়ে ভাবীর সাথে তুমুল তর্ক হয় এবং আমার মহাপুরুষটি আমাদের সব কথা একটু দুর থেকে শ্রবণ করছিলেন এবং আমাকে ইশারা করে বললেন আর যেন কিছু না বলি। শেষমেষ ভাবী যা বলে তাতেই হ্যা সূচক মাথা নাড়ালাম।
যাইহোক এবার মূল পর্বে আসি...
১৯৯৭ ইং সালের নভেম্বর মাস আমার জীবনে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে মর্মান্তিক একটা মাস। যে সাল এবং মাস শত চেষ্টা করলেও ভুলতে পারবোনা....
আমরা ছিলাম এফ/১০/১৬ তে আর রিপন ভাইরা থাকত ১৫ তে এবং আমাদের পরিবার এবং উনাদের পরিবারের (অবশ্য অন্যান্য পরিবারদের সাথেও সম্পর্ক ভাল ছিল) সাথে ছিল অন্য রকম এক আত্মার সম্পর্ক।
আমি ৯৮ ব্যাচের পরীক্ষার্থী ছিলাম। আমার টেস্ট পরীক্ষার পর রেজাল্ট বের হলো। পাশও করলাম এবং ফরম পিলাপও করে পেললাম। কিন্তু কেন জানি পড়ালেখায় মন বসাতে পারছিলাম না। তো আম্মাকে বললাম গ্রামের বাড়ী( কক্সবাজার) থেকে একটু ঘুরে মনটা একটু ফ্রেস করে আসি। আম্মা বলল তোর আব্বা ডিউটি থেকে আসলে বলে দেখি! আব্বা বলল হুম ঠিক আছে তবে ১ সপ্তাহের বেশী থাকা যাবে না। আবার কি যেন চিন্তা করে বললেন সামনের সপ্তাহে অর্থাত্ শুক্রবারে(১৯৯৭ নভেম্বরের ১২তাং) সবাই যাও। আমি শুক্রবার (১৯ তাং) সকালে গিয়ে বিকালের দিকে সবাই চলে আসব।
তো আমরা ঠিকই ১২ তাং চলে আসি আব্বাকে ছাড়া।
আব্বাকে রেখে আসছি কারন উনিতো আসছেন ১৯ তাং আমাদের নিয়ে যাওয়ার জন্যই আমার প্রিয় সিএসএম কলোনীতে।
আসল সেই অনাকান্ঙিত দিন ১৯শে নভেম্বর। সকাল ৯টার দিকে মামার কাছে খবর পেলাম তোর আব্বা আর নেই। আমি বললাম নেই মানে। উনি বলল সকাল সাড়ে ৬ টার দিকে উনি মার গেছেন।
এবার বোঝেন আমার অবস্থাটা কোন পর্যায়ে ছিল। তখন আমরা ওই অবস্থায় রওনা দেওয়ার জন্য সব ঠিক। তখন মামার কাছে আবার খবর আসল যেতে হবেনা ওরা ওখান থেকে মরদেহ নিয়ে রওনা দিয়েছে কিন্তু চিন্তা করতে লাগলাম আমরাতো সবাই এখানেই। কে বা কারা আমার আব্বার সাথে আছে!
আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম এবং ৩টার দিকে আব্বা আমাদেরকে তার বলে যাওয়া কথামত ঠিকই এসেছিলেন কিন্তু না ফেরার দেশে হয়েই এসেছিলেন। এবং আমার আব্বার এম্বুলেন্স গাড়ী থেকে প্রথম নামতে দেখলাম আমার সেই প্রিয় মহাপুরুষটিকে(রিপন ভাই)। আমার আর বুজতে বাকি রইল না ওখানকার(সিএসএম কলোনী) পুরো বিষয়টা।

আমি সাধারনত কারো পায়ে ধরে সালাম করিনা কিন্ত যারা আমার খুব পছন্দের মানুষ হয় আমি তাদের কাছ থেকে এই পায়ে ধরে সালামটা ঠিকই আদায় করি। তাই রিপন ভাইকে পায়ে ধরে সালাম করলাম।
আজ রিপন ভাই যে কাজটি বন্যা আপার আব্বার জন্য করেছেন ঠিক সেই একই কাজটা আজ থেকে প্রায় ১৮ বছর আগে আমার আব্বার সব কিছুই তিনি করে গেছেন।
আমার আম্মা থেকে শুরু করে মামা, খালা এবং আমার সব রিলেটেডরা সবাই রিপন ভাইয়েরে চিনে এবং উনার কথা জিজ্ঞেস করে। এমনকি আমার নানীও(আল্লাহর রহমতে এখনও ওনি বেছে আছেন) রিপন ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করে আর আমি তাদেরকে উনার ছবি দেখায় এবং বলি উনি ভাল আছেন।
No comments:
Post a Comment